Published : 19 Jan 2025, 08:40 PM
ঢাকা, সিলেট ঘুরে চট্টগ্রাম- প্রতিপক্ষ যে দলই হোক না কেন, ফরচুন বরিশালের ম্যাচ মানেই গ্যালারিতে লাল জার্সি গায়ে দর্শকের জোয়ার। ব্যতিক্রম ছিল না রোববার স্থানীয় দল চিটাগং কিংসের বিপক্ষেও। বরিশালের তরুণ পেসার রিপন মন্ডলের মতে, অভিজ্ঞ তিন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর জন্যই তাদের দলটা এমন দর্শকপ্রিয়। সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা প্রশ্ন ছুটে গেল, একদিন তার নামেও নিশ্চয়ই দর্শক ভিড় করবে গ্যালারিতে? তরুণ পেসার লাজুক হাসিতে বললেন, ‘হ্যাঁ… ইনশাল্লাহ…।’
সামনের দিনগুলোতে রিপনের জন্য সত্যিই গ্যালারিতে গর্জন উঠবে কি না, এখনই বলা কঠিন। তবে সেই পথে অন্তত হাঁটা শুরু করেছেন ২১ বছর বয়সী পেসার। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে রোববার চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয়ে রেখেছেন বড় অবদান।
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারে প্রথম বল হাতে পান রিপন। তিন চারের সঙ্গে একটি ছক্কা মেরে ততক্ষণে উড়াল দেওয়ার আভাস উসমান খানের ব্যাটে। তবে চিটাগংয়ের সফলতম ব্যাটসম্যানকে দ্বিতীয় বলেই ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেন রিপন।
ওই ওভারে চিটাগংয়ের ছন্দে থাকা আরেক ব্যাটসম্যান গ্রাহাম ক্লার্কের উইকেটও নেন তরুণ পেসার। নিজের প্রথম ওভারেই সবচেয়ে সফল দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করে চিটাগং কিংসের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ডই একরকম ভেঙে দেন রিপন।
পরে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্থানীয় দল। শেষ দিকে বোলিংয়ে ফিরে সৈয়দ খালেদ আহমেদকে বোল্ড করেন রিপন। সব মিলিয়ে ১২১ রানে থামে চিটাগংয়ের ইনিংস।
৪ ওভারে মাত্র ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন রিপন। পরে রান তাড়ায় অপরাজিত ফিফটি করে ম্যান অব দা ম্যাচ হন দাভিদ মালান। তবে পুরস্কারটি রিপন পেলেও দ্বিমত করার লোক বেশি থাকত না।
এমনিতে তার বোলিংয়ে গতি খুব বেশি নেই। লাইন-লেংথ তার শক্তির জায়গা। এই ম্যাচেও তার পরিকল্পনা ছিল একই।
“উইকেট যেমনই হোক, ভালো জায়গায় বোলিং করলে সব জায়গায়ই খেলা কঠিন। আমরা ভালো জায়গা বুঝে বল করার চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয়নি, উইকেটের আচরণে তেমন পরিবর্তন হয়েছে। শুধু পরিকল্পনা ঠিক রেখে ভালো জায়গায় বোলিংয়ের চেষ্টা ছিল।”
আগের ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটাসের বিপক্ষেও দারুণ বোলিং করেন রিপন। পাওয়ার প্লেতে তিনি আউট করে দেন আগের ম্যাচে রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি করা লিটন কুমার দাসকে। সেদিন ৪ ওভারে খরচ করেন ২৭ রান।
বরিশাল স্কোয়াডে আছেন আরেক অভিজ্ঞ পেসার ইবাদত হোসেন চৌধুরি। তাকে বাইরে রেখে আপাতত রিপনকে সুযোগ দিচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। পরপর দুই ম্যাচে চমৎকার বোলিংয়ে দলের ভরসার প্রতিদান দিলেনন তরুণ পেসার।
পারিপার্শ্বিকতা না ভেবে নিজের কাজটা ঠিকঠাক করার মন্ত্রেই এখনও পর্যন্ত সফল তিনি।
“ইবাদত ভাই... আমাদের দলে যেহেতু অনেক বড় বড় তারকা। তাই এগুলো মাথায় না নিয়ে শুধু খেলাটা উপভোগের চেষ্টা করছি। আমি শুধু সুযোগ পাই, যেন শতভাগ দিতে পারি। আমি যদি নিজের শতভাগ দিতে পারি, দলের জন্যও ভালো, আমার জন্যও ভালো।”
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে রিপনকে একাদশে রেখেই যাত্রা শুরু করেছিল বরিশাল। সেদিন হতাশ করেন তিনি। ইয়াসির আলি চৌধুরি, এনামুল হকদের বেধড়ক পিটুনি হজম করে চার ওভারে দিয়ে ফেলেন ৫৫ রান। পরের চার ম্যাচে আর সুযোগ পাননি দলে। চট্টগ্রাম পর্বে একাদশে জায়গা ফিরে পেয়ে সামর্থ্যের ছাপ রেখে চলেছেন সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পাওয়া এই পেসার।