Published : 24 May 2025, 06:15 PM
পুরো ম্যাচে সবচেয়ে ভালো আবহাওয়া পাওয়া গেল চতুর্থ দিন। কিন্তু এ দিনও খেলা হলো ৬০ ওভারের কম। কারণ ফল আসার ছিল না কোনো সম্ভাবনা। তাই ঝলমলে রোদের মাঝেই দিনের প্রায় দুই ঘণ্টা বাকি থাকতেই ড্র মেনে নেয় নিউ জিল্যান্ড 'এ' ও বাংলাদেশ 'এ' দল।
প্রকৃতির বিরূপ আচরণে চার দিন মিলিয়ে দুই দলের তিন ইনিংসও শেষ হয়নি। সব মিলিয়ে পতন হয় মাত্র ২২টি উইকেটের।
আগের দুই দিনের হতাশা ভুলে ম্যাচের শেষ দিন ৪ উইকেট নেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। তবে সফরকারীদের লিড ঠেকাতে পারেননি। পরে এক সেশনেরও কম ব্যাটিং করে বাংলাদেশ।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্ট ড্র হওয়ায় ট্রফি পেয়ে গেল কিউইরা। সিলেটে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের নাটকীয় ধসে দারুণ জয় পেয়েছিল তারা।
চার দিনের ম্যাচের সিরিজের আগে এক দিনের ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
চার দিনের সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৫৭ রান করে বাংলাদেশ। নিক কেলির সেঞ্চুরির সঙ্গে আরও তিনটি ফিফটিতে কিউইরা অলআউট হয় ৩৭৯ রানে। ততক্ষণে শেষ প্রায় সাড়ে তিন দিনের খেলা।
পরে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ দল ২৪ ওভার ব্যাটিং করে ২ উইকেটে ৮৭ রান করার পর হাত মিলিয়ে নেন দুই দলের ক্রিকেটাররা।
সিরিজে নুরুল হাসান সোহান ছাড়া বাংলাদেশের কেউই তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। এর আগে এক দিনের সিরিজেও সেঞ্চুরি করেছিলেন স্বাগতিক দলের অধিনায়ক। দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচে কাছাকাছি গিয়েও পারেননি মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এছাড়া একটি করে পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেলেন সাইফ হাসান, অমিত হাসান, জাকির হাসান ও মাহিদুল ইসলাম।
বোলারদের দুই ম্যাচেই ইনিংসে ৪টি করে উইকেট নেন নাঈম। প্রথম ম্যাচে সৈয়দ খালেদ আহমেদ প্রথম ইনিংসে ৬টি ও হাসান মুরাদ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। তবে সার্বিকভাবে কেউই ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে পারেননি।
৪ উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করা কিউইরা বাকি ৬ উইকেটে করতে পারে আর ১০২ রান।
দিনের শুরুতে সোহানের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন ম্যাট বয়েল। ৭ চার ও ১ ছক্কায় তিনি করেন ৯৯ বলে ৫৮ রান।
১২৩ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙার পর সেঞ্চুরি করেন কেলি। ৭ চার ও ৬ ছক্কায় ১৬৪ বলে টানা দ্বিতীয় ইনিংসে তিন অঙ্কের স্বাদ পান ৩১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি আগের ম্যাচেও।
সেঞ্চুরি ছুঁয়ে নাঈমের বলে বড় শটের খোঁজে লং অফে ধরা পড়েন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
পরের ওভারে মিচ হে স্টাম্পড আউট করে স্বাগতিকদের লিড পাওয়ার সম্ভাবনা জাগান নাঈম। তবে ছোট ছোট ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর পেরিয়ে দলকে এগিয়ে দেন ডিন ফক্সক্রফট ও জেডন লেনক্স।
নাঈমের ৪ উইকেট ছাড়া সৈয়দ খালেদ আহমেদের শিকার ৩টি।
পরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ কিছু শটে ইতিবাচক শুরু করেন এনামুল হক। কিন্তু আগের ইনিংসগুলোর মতোই উইকেট বিলিয়ে দেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৩ বলে করেন ২৪ রান।
এক দিনের সিরিজের পর চার দিনের দুই ম্যাচ, সব মিলিয়ে সাত ইনিংসে একটিও ফিফটি করতে পারেননি ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফোয়ারা ছোটানো এনামুল। সর্বোচ্চ ইনিংস ৪৮ রানের।
তিন নম্বরে নেমে সাইফ হাসানও হতাশ করেন। ৩০ বলে ১৬ রান করে আউট হন তিনি। পরে আর উইকেট পড়তে দেননি অমিত ও জাকির। অমিত ৩৬ বলে ২১ ও জাকির ৫৫ বলে ২৪ রান করেন।
চলতি বছর আরও একটি সিরিজ হওয়ার কথা বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। সব ঠিক থাকলে আগামী অগাস্টে দুটি চার দিনের ও ছয়টি টি-টোয়েন্টি খেলতে অস্ট্রেলিয়ায় যাবে তারা। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ওই সিরিজে ঘোষণা দেয়নি বিসিবি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ 'এ' ১ম ইনিংস: ৩৫৭
নিউ জিল্যান্ড 'এ' ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৭৭/৪) ১২৫.২ ওভারে ৩৭৯ (কেলি ১০৩, বয়েল ৫৮, হে ৩, ফক্সক্রফট ২৭, ফোকস ১৪, লেনক্স ২০, লিস্টার ০*; খালেদ ২১-১-১০০-৩, নাঈম ৪৪.২-১০-১০২-৪, নাসুম ২৭-৫-৮১-০, মুরাফ ২৫-৫-৭১-০, সাইফ ৮-১-১৮-১)
বাংলাদেশ 'এ' ২য় ইনিংস: ২৪ ওভারে ৮৭/২ (এনামুল ২৪, জাকির ২৪*, সাইফ ১৬, অমিত ২১*; ফোকস ৬-০-২৮-১, লিস্টার ৪-০-১৭-১, লেনক্স ১০-০-২১-০, ফক্সক্রফট ৪-১-১৯-০)
ফল: ম্যাচ ড্র
সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ১-০তে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: নিক কেলি