Published : 03 May 2024, 03:50 PM
শেষ ওভারে যখন বল হাতে নেন ভুবনেশ্বর কুমার, ম্যাচের ভাগ্য তখন দুলছে পেন্ডুলামের মতো। রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় ঠাসা লড়াইয়ের ওই মুহূর্তে নাকি ফলাফল নিয়ে কোনো ভাবনা ছিল না সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পেসারের মাথায়। স্রেফ প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দিয়ে চমৎকার বোলিংয়ে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে দলকে এনে দেন তিনি অবিশ্বাস্য এক জয়।
ঘরের মাঠে বৃহস্পতিবার আইপিএলের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে রাজস্থানকে ১ রানে হারায় হায়দরাবাদ। দলটির অসাধারণ এই জয়ের নায়ক ভুবনেশ্বর। রান তাড়ায় প্রথম ওভারে জস বাটলার ও সাঞ্জু স্যামসনকে শূন্য রানে ফেরানো অভিজ্ঞ পেসার শেষ ওভারেও ছিলেন দুর্দান্ত। ৪১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরাও হন তিনি।
২০২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেষ ৬ বলে রাজস্থানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। ভুবনেশ্বরের প্রথম বলে এক রান নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, স্ট্রাইক পান রভম্যান পাওয়েল। দ্বিতীয় বলে দুই রান নেওয়ার পর তৃতীয় বলে ফাইন লেগ দিয়ে চার মারেন ক্যারিবিয়ান বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান।
৩ বলে যখন দরকার ৬, হায়দরাবাদের ফিল্ডারদের আলগা থ্রোয়ে পরের দুই বলে দুটি করে রান নেন পাওয়েল। শেষ বলে ২ রানের সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি তিনি। ভুবনেশ্বরের ফুলটস বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি পাওয়েল। বল প্যাডে আঘাত করলে হায়দরাবাদের এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি রাজস্থানের। অকল্পনীয় এক জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে স্বাগতিকরা।
দলকে এমন জয় এনে দেওয়া ভুবনেশ্বর ম্যাচ শেষে বলেন, ফলাফল নিয়ে তার কোনো ভাবনাই ছিল না। শুধু শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচটি টেনে নিতে চেয়েছিলেন তিনি।
“আমি সবাইকেই বলি, প্রক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমি কার্যত কোনো কিছুই ভাবছিলাম না (শেষ ওভারে)। ফলাফল নিয়ে কোনো চিন্তাই ছিল না আমার। আমি যেটা করতে পারি কেবল সেটাই করার চেষ্টা করেছি।”
“আমি জানতাম, যদি স্রেফ দুটি ভালো বল করতে পারি এবং ম্যাচটি শেষ বল পর্যন্ত যায়, যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। এটা ফুলটস ছিল, আমি জানি, আর সে (পাওয়েল) ডেলিভারিটি মিস করে।”
মন্থর ওভার রেটের কারণে শেষ ওভারে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে পাঁচ জনের জায়গায় চার জন ফিল্ডার নিয়ে ফিল্ডিং করতে হয় হায়দরাবাদকে। এটাও নাকি চিন্তায় ছিল না ভুবনেশ্বরের। তিনি কেবল নিজের কাজটা করে যেতে চেয়েছেন সঠিকভাবে।
“একজন অতিরিক্ত ফিল্ডার বৃত্তের ভেতরে রাখা নিয়ে কিংবা অন্য যা সীমাবদ্ধতা ছিল, এসব নিয়ে একদমই ভাবিনি। ফলাফলের ভাবনা থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন ছিলাম। ফিল্ডার কোথায় তা নিয়ে না ভেবে আমি প্রক্রিয়াতে মনোনিবেশ করি; এটাই ছিল একমাত্র কাজ সেসময় যা আমি করেছি।”
শেষ বলের আগ পর্যন্ত এই ম্যাচ জিতবেন, ভাবতেই পারেননি হায়দরাবাদ অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ভুবনেশ্বরকে প্রশংসায় ভাসানো অস্ট্রেলিয়ান পেসার বললেন, সুপার ওভার খেলতে পারলেও খুশি ছিলেন তিনি।
“অসাধারণ একটি ম্যাচ। শেষ বলটার সময় আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে, আমরা যদি উইকেট নিতে পারি তাহলে জিতব। আমি স্রেফ সুপার ওভার নিয়ে ভাবছিলাম।”
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে এখন চতুর্থ স্থানে হায়দরাবাদ। ১০ ম্যাচে ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট তাদের। আর সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রাজস্থান।