Published : 17 Jun 2025, 10:09 PM
টেস্ট থেকে রোহিত শার্মার অবসরের পর সাদা পোশাকে ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে জাসপ্রিত বুমরাহকে দায়িত্ব দিতে চেয়েছিল দেশটির ক্রিকেট বোর্ড-বিসিসিআই। এই তারকা বললেন, ‘ওয়ার্কলোড’ ম্যানেজমেন্টের কারণে সেই দায়িত্ব নিতে চাননি তিনি। তাকে অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা না করতে বোর্ডকে অনুরোধ করেছিলেন ৩১ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার।
বর্তমানে পালাবদলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারতের টেস্ট দল। গত বছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির মাঝপথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন অভিজ্ঞ স্পিনার রাভিচান্দ্রান অশ্বিন। এবারের আইপিএলের মাঝপথে পাঁচ দিনের ব্যবধানে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেন দুই তারকা ব্যাটসম্যান রোহিত ও ভিরাট কোহলি।
শুরুতে বুমরাহকেই মনে করা হচ্ছিল রোহিতের সম্ভাব্য উত্তরসূরি। পরে নতুন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়া হয় ২৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান শুবমান গিলকে। আগামী শুক্রবার লিডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট দিয়ে শুরু হবে তার পথচলা।
তার আগে স্কাই স্পোর্টসে সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান দিনেশ কার্তিকের সঙ্গে আলাপে বুমরাহ বললেন, বোর্ড তাকে অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা করলেও নিজ থেকেই দায়িত্ব নিতে চাননি তিনি।
“এখানে (অধিনায়কত্ব নিয়ে) কোনো কাল্পনিক গল্প নেই। কোনো বিতর্ক বা কোনো শিরোনাম করার মতো বিবৃতি নেই যে, আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বা আমার দেখভাল করা হয়নি। রোহিত ও ভিরাট (কোহলি) অবসর নেওয়ার আগে আইপিএল চলাকালীন আমি বিসিসিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, পাঁচ টেস্টের সিরিজে আমার ওয়ার্কলোড নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমার পিঠের যত্ন নেওয়া লোকদের সঙ্গে কথা বলেছি, চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলেছি, ওয়ার্কলোডের ব্যাপারে আমাকে কতটা সতর্ক হতে হবে, সেটা নিয়ে তিনি সবসময় বলেছেন।”
“আমি তার সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তারপর আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলাম যে, আমাকে আরেকটু সতর্ক হতে হবে। বিসিসিআইকে ফোন করে বলেছিলাম, আমি নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকতে চাই না, কারণ পাঁচ টেস্টের সিরিজের সব ম্যাচে আমার সর্বোচ্চটা দিতে পারব না। সেসময়, হ্যাঁ, বিসিসিআই আমাকে নেতৃত্বের জন্য ভাবছিল। কিন্তু আমাকে না বলতে হয়েছিল। এটা দলের জন্যও ভালো নয় যে, পাঁচ টেস্টের সিরিজে কেউ নেতৃত্ব দিচ্ছে তিন ম্যাচে এবং অন্য কেউ দুই ম্যাচে। দলের জন্য এটা ন্যায্য নয় এবং আমি সবসময় দলকে অগ্রাধিকার দিয়েছি।”
গত অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতের বোলিং আক্রমণকে প্রায় একাই টানেন বুমরাহ। অসাধারণ পারফরম্যান্সে উইকেট নেন রেকর্ড ৩২টি, বোলিং গড় ছিল ১৩.০৬। ১৫১.২ ওভার বোলিংয়ের ধকল যায় তার ওপর দিয়ে। তাতেই বিদ্রোহ করে বসে শরীর। সফরের শেষ টেস্টে পিঠের চোটে পড়েন তিনি।
ওই চোটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ও আইপিএলের শুরুতে খেলতে পারেননি বুমরাহ। ২০২৩ সালে একবার তার পিঠে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। সেখানে আরেকটি চোট তার ক্যারিয়ার হুমকিতে ফেলে দিতে পারে। তাই ওয়ার্কলোড নিয়ে খুব সতর্ক তিনি।
আগেই জানা গেছে, ইংল্যান্ড সিরিজে পাঁচ টেস্টের মধ্যে তিনি খেলবেন তিনটিতে। তবে কোন তিনটি, সেটা এখনই নির্ধারণ হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে সবাই মিলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
“আমি যদি অধিনায়ক হতাম, তাহলে বলতে পারব না যে, ‘ঠিক আছে, আমি শুধু তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলব।’ এটা দলে ভালো বার্তা দেয় না। এসব বিষয় মাথায় রেখে, একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব, আমার সামর্থ্য অনুযায়ী সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি, যে ম্যাচগুলো আমি খেলব, সেগুলোতে আমার সেরাটা দেব।”