Published : 24 Aug 2022, 08:13 PM
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। দুই দেশের ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সমর্থকদের মনে বয়ে যায় উন্মাদনার ঢেউ। উঠে আসে পুরনো অনেক দ্বৈরথের স্মৃতি। আসছে এশিয়া কাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে লড়াইয়ের আগেও যেমন কপিল দেবের মনে পড়ছে তিন যুগ আগের একটি ম্যাচের কথা। রোমাঞ্চে ভরা যে ম্যাচে শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে হতাশায় ডুবিয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ।
ম্যাচটি ছিল ১৯৮৬ সালের অস্ট্রাল-এশিয়া কাপে। এশিয়ার তিন দল ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডকে নিয়ে হয়েছিল টুর্নামেন্টটি। ফাইনালে ভারতের ২৪৫ রান তাড়ায় মিয়াঁদাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জয়োল্লাস করেছিল পাকিস্তান।
শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটির শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১১ রান। শেষ বলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৪ রানের। জিততে ভারতের দরকার ছিল একটি উইকেট।
পেসার চেতন শর্মার করা ফুলটসটি মিডউইকেট দিয়ে ওড়ান পাকিস্তান ব্যাটিং কিংবদন্তি। ব্যাটে-বলে করার পরপরই দুই হাত উঁচিয়ে দৌড় শুরু করে দেন মিয়াঁদাদ। ১ উইকেটের জয়ে উল্লাসে মাতে পুরো পাকিস্তান দল। হারের হতাশা সঙ্গী হয় ভারতের।
স্টার স্পোর্টসের একটি আয়োজনে সম্প্রতি ম্যাচটি নিয়ে কথা তোলেন ওয়াসিম আকরাম। ফিফটি করা দিলিপ ভেংসরকার, কীর্তি আজাদ ও রবি শাস্ত্রীকে দ্রুত ফিরিয়ে ভারতের রানের গতি কমিয়ে দিয়েছিলেন পেসার ওয়াসিম। সেটাও কপিলকে মনে করিয়ে দিলেন তিনি।
“সেই বিখ্যাত ম্যাচ, যেখানে আপনারা (ভারতের) ২৭০ রান করার পথে ছিলেন। কিন্তু, তখন আমি দ্রুত তিন উইকেট তুলে নেই এবং আপনারা শেষ পর্যন্ত ২৪৫ রানে থেমে যান।”
এরপরই কপিল স্মৃতিচারণ করেন শেষ ওভারের। জানান, পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই হারের পর ভারতের আত্মবিশ্বাস নেমে গিয়েছিল একদম তলানিতে।
“আমাদের ভাবনা ছিল, ম্যাচ বাঁচাতে শেষ ওভারের জন্য ১২-১৩ রান রাখতেই হবে। কাজটি ছিল খুবই কঠিন, ওই সময়ে এই রান করা প্রায় অসম্ভব ছিল।”
“যখন শেষ ওভারে ম্যাচ গড়াল, আমরা চেতনের হাতে বল তুলে দেই। আমার এখনও মনে হয়, তার ভুল ছিল না। শেষ বলে তাদের ৪ রান দরকার ছিল এবং আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে বলটি লো ইয়র্কার করার। বিকল্প উপায় ছিল না। সে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিল, আমরাও। বলটি লো ফুলটস হয়ে যায়। মিয়াঁদাদ পেছনের পা না নাড়িয়ে ব্যাটে-বলে করে। এমনকি আজও যখন ওই ম্যাচের কথা মনে পড়ে, ঘুমাতে পারি না। সেই হার পরবর্তী চার বছরের জন্য পুরো দলের আত্মবিশ্বাস গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো ছিল খুব কঠিন।”
ওই ম্যাচে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক মিয়াঁদাদ খেলেছিলেন তিনটি করে ছক্কা-চারে ১১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। অসাধারণ ব্যাটিং উপহার দিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন তিনিই।
এবারের এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আগামী রোববার মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। আসরের সূচি এমনভাবে করা হয়েছে, কোনো অঘটন না ঘটলে সুপার ফোরেও দেখা হবে তাদের। এরপর দুই দলের আরেকটি লড়াই হতে পারে ফাইনালে উঠলে।