Published : 22 Nov 2024, 09:57 AM
সাড়ে ছয় মাস আগে যখন সিরিজের সূচি ঘোষণা করা হলো, প্রথম টেস্ট অ্যান্টিগায় রাখার কারণ পরিষ্কার মোটামুটি তখন থেকেই। এই মাঠে সবশেষ দুই সফরেই বাংলাদেশ স্রেফ বিধ্বস্ত হয়েছে ক্যারিবিয়ান পেসের সামনে। এবারও এখানে সিরিজ শুরুর উদ্দেশ্য বুঝতে খুব বড় বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট সরাসরি জানিয়েও দিলেন, এই মাঠে খেলতে তারা পছন্দ করেন খুব।
তবে আগের সুখস্মৃতিতে বুঁদ থাকতে চান না ব্র্যাথওয়েট। বরং বাংলাদেশকে আবার এখানে নাস্তানাবুদ করে নতুন প্রাপ্তির অপেক্ষায় ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। টেস্ট শুরু বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত আটটায়।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রথমবার টেস্ট খেলে ২০১৮ সালে। কিমার রোচ, জেসন হোল্ডার ও মিগেল কামিন্সের ত্রিমুখি তোপে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন দল সেবার প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ৪৩ রানে। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর সেটি।
দ্বিতীয় ইনিংসে এক পর্যায়ে দলের রান ছিল ৭ উইকেটে ৬৩। পরে আটে নামা নুরুল হাসানের ফিফটিতে ১৪৪ রান পর্যন্ত যেতে পারে তারা। এবার ৫ উইকেট শিকার করেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ইনিংস ব্যবধানে।
এরপর ২০২২ সালের সফরে এখানেই ছিল প্রথম টেস্ট। এবার চার ক্যারিবিয়ান পেসারের যৌথ সংযোগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দৌড় শেষ ১০৩ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে রান এক পর্যায়ে ছিল ৬ উইকেটে ১০৯। পরে ইনিংস ব্যাবধানে হার এড়ানো যায় সাকিব ও সোহানের ফিফটিতে ২৪৫ রান তুলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার ম্যাচ জিতে নেয় ৭ উইকেটে।
সেই দুই টেস্টের মতো কিছু করার আশা নিশ্চয়ই এবারও থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে অতীতে ফিরে গিয়ে নয়, বরং নতুন করেই লক্ষ্য পূরণের রোমাঞ্চ নিয়ে মাঠে নামার অপেক্ষায় ব্র্যাথওয়েট ও তার দল।
“ছেলেরা সবাই এই সিরিজের জন্য মুখিয়ে আছে। বেশ কিছুদিন ধরে আমরা টেস্ট ক্রিকেট খেলছি না। এটা এমন একটি মাঠ, যেখানে খেলতে আমরা পছন্দ করি। এখানে খেলতে উপভোগ করি। মাঠে নামতে তর সইছে না ছেলেদের।”
“আগে যা হয়েছে, সব এখন অতীত। খুবই প্রতিভাবান বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে খেলছি আমরা। যা চলে গেছে, সেসব তো গেছেই। আমরা সামনে তাকিয়ে আছি এবং যা আছে আমাদের, সবকিছু নিয়ে শুরু ভালো করার অপেক্ষায় আছি।”
টেস্ট ক্রিকেটে এই বছর খুব ভালো ছন্দে নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজও। সবশেষ সিরিজে গত অগাস্টে দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে তারা। বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় স্মরণীয় সেই জয়টির ছাড়া এই বছর বাকি ছয় টেস্টে আর কোনো জয় নেই তাদের। তবে বাংলাদেশের অবস্থা তো আরও করুণ!
পাকিস্তান সফরে ঐতিহাসিক সেই সাফল্যের পর ভারত সফরে ও দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। এখন অপেক্ষায় অ্যান্টিগার পেস চ্যালেঞ্জ।
উইকেট যে এবারও পেস-সহায়ক হবে, সেটি ফুঠে উঠছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশ থেকেই। কিমার রোচ, আলজারি জোসেফ, শামার জোসেফ, জেডেন সিলস-এই চার বিশেষজ্ঞ পেসারের সঙ্গে একাদশে আছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার জাস্টিন গ্রিভস।
ব্র্যাথওয়েট অবশ্য বললেন, খেলতে জানলে এই উইকেটে ব্যাটসম্যানদেরও ভালো করার সুযোগ থাকবে।
“ভালো ক্রিকেট পিচ বলেই মনে হচ্ছে। সত্যি বলতে, অ্যান্টিগায় সবসময়ই পেসারদের জন্য কিছুটা মুভমেন্ট থাকে ও বাউন্স থাকে। এবারও সেরকমই থাকবে। তবে বল ভালোভাবে ব্যাটেও আসবে। সব মিলিয়ে ভালো ক্রিকেট পিচ হবে। ম্যাচের পরের দিকে স্পিন ধরতে পারে।”
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সুযোগটি নিতে পারবেন কি না কিংবা ক্যারিবিয়ান পেসাররা সুযোগটি বাংলাদেশকে দেবেন কি না, কৌতূহল সেখানেই।