Published : 27 Feb 2025, 10:20 AM
আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার বলে কথা! আজমাতউল্লাহ ওমারজাই দেখিয়ে দিলেন, কেন তিনি এই আফগানিস্তান দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৭৭ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা যদিও ইব্রাহিম জাদরান, তবে পুরস্কারটি ওমারজাই পেলেও খুব বিস্ময়কর হতো না। দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে তিনিও আফগানিস্তানের স্মরণীয় এই জয়ের আরেক নায়ক।
এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সেই ওমারজাই মনে করিয়ে দিয়েছেন সাচিন টেন্ডুলকারকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এক ম্যাচে ৪০ ছোঁয়া ইনিংস আর অন্তত চার উইকেট শিকারের যুগলবন্দি এতদিন ছিল কেবল ভারতীয় কিংবদন্তির। এবার সেখানে যোগ হলো আফগান অলরাউন্ডারের নাম।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বুধবার লাহোরে ৩১ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন ওমারজাই। তিনি যখন ক্রিজে যান, দলের রান তখন ৪ উইকেটে ১৪০, রানরেট ওভারপ্রতি পাঁচের নিচে। তার হাত ধরেই আফগান ইনিংসের মোড় বদলের শুরু। ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে তার জুটিতে ৭২ রান আসে ৬৩ বলে।
ইনিংসটাকে তিনি পূর্ণতা দিতে পারেননি ৪০তম ওভারে আউট হয়ে যাওয়ায়। তবে বল হাতে পুষিয়ে দেন দারুণভাবে।
ফিল সল্টকে ফিরিয়ে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিন তিনি। পরে পুরোনো বলেও আদায় করে নেন একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। জো রুট ও জস বাটলারের জুটি যখন আফগানদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, ৩৮ রান করা বাটলারকে ফিরিয়ে ৮৩ রানের জুটি ভাঙেন ওমারজাই।
আরেকটি স্পেলে যখন তিনি ফেরেন, আফগানিস্তান আর জয়ের মাঝে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে তখন জো রুট। ১২০ রান করা এই ব্যাটসম্যানকেও বিদায় করে দেন তিনি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শিকার ধরেন পরের ওভারে, এবার ফিরিয়ে দেন ৩২ রান করা জেমি ওভারটনকে।
তার কাজ শেষ হয়নি সেখানেও। শেষ ওভারে যখন ইংলিশদের প্রয়োজন ১৩ রান, শেষ তুলির আঁচড় দেওয়ার ভার পড়ে তার ওপরই। প্রথম চার বলে স্রেফ চারটি সিঙ্গল দেন তিনি। পঞ্চম বলে আদিল রাশিদকে আউট করে নিজের পঞ্চম উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি নিশ্চিত করে দেন দলের জয়।
তার ওয়ানডে ও লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট এটি। বৈশ্বিক আসরে আফগানিস্তানের প্রথম পাঁচ উইকেটর কীর্তিও এটি। আগের সেরা ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মোহাম্মদ নাবির ৩০ রানে ৪ উইকেট।
এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সেই টেন্ডুলকারের সঙ্গী হন ওমারজাই।
টেন্ডুলকার উইকেট নিয়েছিলেন একটি কম, তবে তার ইনিংসটি ছিল আরও অনেক বড়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম আসর সেটি, টুর্নামেন্ট যখন পরিচিত ছিল নকআউট বিশ্বকাপ বা মিনি বিশ্বকাপ নামে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেদিন ১২৮ বলে ১৪১ রানের অসাধারণ ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন টেন্ডুলকার। পরে বল হাতে লেগ স্পিন ও অফ স্পিনের মিশেলে বৈচিত্রময় বোলিং দিয়ে শিকার করেছিলেন ৩৮ রানে ৪ উইকেট।
টেন্ডুলকারের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ঝলমলে বছর ছিল ১৯৯৮ সালই। সেবার ওয়ানডেতে ৯ সেঞ্চুরিতে ১ হাজার ৮৯৪ রান করেছিলেন তিনি ৬৫.৩১ গড় ও ১০২.১১ স্ট্রাইক রেটে। এক পঞ্জিকাবর্ষে যা এখনও সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আর রানের রেকর্ড। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি ২৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি ওই বছরই।