ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ
Published : 11 Jun 2025, 10:02 AM
উত্তাল ব্যাটিংয়ে ঝড়ো শুরু করলেন দুই ওপেনার বেন ডাকেট ও জেমি স্মিথ। শেষে তাণ্ডব চালালেন হ্যারি ব্রুক ও জ্যাকব বেথেল। আড়াইশ ছুঁইছুঁই লক্ষ্যে রভম্যান পাওয়েলের বিধ্বংসী ইনিংসে ব্যবধান কমলেও পরাজয় এড়াতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও সব ম্যাচ জিতল ইংল্যান্ড।
সাউদাম্পটনে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৭ রানে হারায় হ্যারি ব্রুকের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড। ২৪৯ রানের লক্ষ্যে মঙ্গলবার রাতে ২১১ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা।
প্রায় ৪ বছর পর এই সংস্করণে কোনো দলকে ৩-০তে হারাল ইংল্যান্ড। এর আগে ওয়ানডে সিরিজও ৩-০ ব্যবধানে জেতে স্বাগতিকরা। দুই সিরিজ মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬-০ ব্যবধানে হারিয়ে সাদা বলের অধিনায়কত্বে যাত্রা শুরু করলেন ব্রুক।
শেষ ম্যাচের নায়ক ডাকেট। ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৪৬ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি ওপেনার। আরেক ওপেনার জেমি স্মিথ ২৬ বলে ৬০ রানের সঙ্গে শেষ দিকে বেথেল ও ব্রুকের ক্যামিও ইনিংসে আড়াইশর কাছে যায় ইংল্যান্ড।
টি-টোয়েন্টিতে এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ২০২৩ সালে একই দলের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২৬৭ রান করেছিল ইংল্যান্ড।
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে স্বাগতিকদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ক্যারিবিয়রা। কিন্তু টসের সিদ্ধান্ত কাজে লাগাতে পারেননি বোলাররা। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ৫৩ বলে ১২০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন ডাকেট ও স্মিথ।
প্রথম দুই ওভার দেখেশুনে কাটান দুই ওপেনার। পরের চার ওভারে ঝড় তোলেন। আকিল হোসেনের বলে ম্যাচের প্রথম ছক্কা মারেন ডাকেট। পরের ওভারে রোমারিও শেফার্ডের বল ছক্কায় ওড়ান স্মিথ।
পাওয়ার প্লের শেষ চার ওভারে ৬৭ রান নেন তারা। সব মিলিয়ে প্রথম ছয় ওভার থেকে আসে ৮৩ রান। পাওয়ার প্লের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে মাত্র ২০ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি পূর্ণ করেন ডাকেট।
এক ওভার পর শেফার্ডের বলে তিনটি ছক্কা মারেন স্মিথ। ক্যারিয়ারের পঞ্চম ম্যাচে প্রথম পঞ্চাশ ছুঁতে তার লাগে মাত্র ২৩ বল। ওই ওভারেই একশ পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড। শেষ বলে স্মিথের ক্যাচ ছাড়েন শিমরন হেটমায়ার।
তবে নবম ওভারে আর ভুল করেননি হেটমায়ার। গুডাকেশ মোটির বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়েন ৫ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংস খেলা স্মিথ।
দশ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১৩৫ রান। বাকি দশ ওভার থেকে আর ১১৩ রান করতে পারে তারা।
দারুণ শুরু করেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জস বাটলার। পাঁচ ওভার বাকি থাকতে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন ডাকেট। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ১০ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন ৩০ বছর বয়সী ওপেনার।শেষের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন বেথেল ও ব্রুক। ১ চার ও ৪ ছক্কায় মাত্র ১৬ বলে ৩৬ রান করেন বেথেল। আর অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ২টি করে চার-ছক্কায় ২২ বলে ৩৫ রান।
বিশাল লক্ষ্যে হতাশ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার এভিন লুইস ও জনসন চার্লস। চার নম্বরে নেমে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন হেটমায়ার। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৮ বলে ২৬ রানে শেষ হয় তার ইনিংস।
তিন নম্বরে নেমে ৩টি করে চার-ছক্কায় ২৭ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক শেই হোপ। তবে শেফার্ড ও শেরফেইন রাদারফোর্ড ব্যর্থ হলে ম্যাচ থেকে ছিটকেই যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
একাই লড়াই চালিয়ে যান পাওয়েল। জেসন হোল্ডারের সঙ্গে ২৬ বলে ৫২ ও নবম উইকেটে আকিলের সঙ্গে মাত্র ১৬ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৫ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন ৩১ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।
ইংল্যান্ডে দুই সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হয়ে এখন আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বৃহস্পতিবার শুরু তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ২৪৮/৩ (স্মিথ ৬০, ডাকেট ৮৪, বাটলার ২২, ব্রুক ৩৫*, বেথেল ৩৬*; আকিল ৪-০-৪২-১, হোল্ডার ৪-০-৪৩-০, শেফার্ড ২-০-৩৯-০, জোসেফ ৪-০-৬০-০, মোটি ৪-০-৪৪-১, রাদারফোর্ড ২-০-২০-১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ২১১/৮ (লুইস ৯, চার্লস ৯, হোপ ৪৫, হেটমায়ার ২৬, রাদারফোর্ড ১, পাওয়েল ৭৯*, শেফার্ড ০, হোল্ডার ২৫, মোটি ১, আকিল ১*; উড ৪-০-৩১-৩, কার্স ৪-০-৬৩-১, জ্যাকস ১-০-১৫-০, ডসন ৪-০-৩৪-১, বেথেল ৩-০-৩২-১, রাশিদ ৪-০-৩০-২)
ফল: ইংল্যান্ড ৩৭ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ৩-০তে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: বেন ডাকেট
ম্যান অব দা সিরিজ: জস বাটলার