Published : 11 Jun 2025, 08:30 PM
‘কালকেও সময় আছে, ধীরে খেলো’- ড্রেসিং রুমের বাইরে থেকে চিৎকার করে বললেন নাহিদ রানা। হাসান মাহমুদের ওই বলে জাকির হাসান কিছুটা আগ্রাসী শট মারার চেষ্টা করেছিলেন। কয়েক বল পর শর্ট বলে ছক্কা মারেন জাকির। সঙ্গে সঙ্গে বড় হাসিতে হাসানকে উদ্দেশ্য করে টিপ্পনী কাটেন নাহিদ।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বিকেলের ছোট্ট দৃশ্য এটি। শ্রীলঙ্কা সফরের আগে বিসিবি লাল ও বিসিবি সবুজ দলের মধ্যে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনের এই চিত্রই জানান দেয়, দিনের শুরুটা কতটা উপভোগ করেন তরুণ গতিতারকা। তার চেয়েও বেশি আলো ছড়ান আরেক পেসার ইবাদত হোসেন চৌধুরি।
বোলারদের দাপটেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচটি। দ্বিতীয় বার ব্যাটিংয়ে নেমে মুমিনুল হকের ৭৮ রানের ইনিংস ছাড়া আর কেউই ফিফটি করতে পারেননি। দিন জুড়েই ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা নেন ইবাদত, নাহিদ, নাঈম হাসানরা।
দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে শুক্রবার শ্রীলঙ্কা যাবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবারও অবশ্য দলের কয়েক জন্য সদস্যের দেশ ছাড়ার কথা রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তান সফর শেষে দেশে ফিরে ঈদের জন্য দলগত অনুশীলনের সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। ছুটি কাটিয়ে সোমবার থেকে দুই দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প করেন ক্রিকেটাররা। পরে বুধবার শুরু হলো দুই দিনের ম্যাচ।
প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের অনুপস্থিতিতে সীমানার কাছ থেকে নানান পরামর্শ দেন সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। এছাড়া স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ ও নতুন পেস বোলিং কোচ শন টেইটকেও ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায়।
এই ম্যাচের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গা আছে যথেষ্টই। একই জায়গা থেকে কিছু ডেলিভারি হঠাৎ লাফিয়েছে। আবার কয়েকটি বল নেমে গেছে হাঁটু সমান উচ্চতায়। এই পরীক্ষা সামলেই ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেছেন মুমিনুল, লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্তরা।
তপ্ত গরমে বিসিবি লাল দলের হয়ে সাদমানের সঙ্গে ইনিংস সূচনা করেন শান্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টেও তাকে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে। নিয়মিত ওপেনার সাদমান বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১৪ বলে ১৭ রান করে আউট হন তিনি।
শান্তর স্ট্রেইট ড্রাইভে ফলো থ্রুতে আঙুল ছুঁয়ে মুমিনুলকে রান আউট করেন নাহিদ। পরে দারুণ এক ডেলিভারিতে মুশফিকুর রহিমকে বোল্ড করেন ইবাদত। রানের খাতা খুলতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
প্রথমবার শূন্য রানে আউট হওয়া মুমিনুল নামেন আবার। এই দফায় গোছানো ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
অন্য প্রান্তে বেশ কিছু চমৎকার শট খেলেন শান্ত। নাঈমের বলে রিভার্স সুইপ করে মারেন বাউন্ডারি। পরে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েই এলবিডব্লিউ হন ৩৯ বলে ৪০ রান করা জাতীয় দলের অধিনায়ক।
শান্তর বিদায়ের পর ৯৭ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল ও লিটন। হাসান মুরাদের বলে স্টাম্পড হয়ে ফেরেন ৯৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলা লিটন। নতুন স্পেলে ফিরে মুমিনুলকে আউট করেন ইবাদত। ১৩১ বলের ইনিংসে ১০ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
শেষ দিকে মাহফুজুর রহমান রাব্বি ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ রান করলে ৯ উইকেটে ২৪৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বিসিবি লাল দল।
প্রায় দুই বছর পর টেস্ট খেলার দুয়ারে থাকা ইবাদত নেন ৩ উইকেট। নাঈমের ঝুলিতেও জমা পড়ে ৩ শিকার। গতি ও বাউন্সে দারুণ বোলিং করা নাহিদ নেন ১ উইকেট।
দিনের শেষ দিকে ১০ ওভারের জন্য নামে বিসিবি সবুজ দল। হাসানের প্রথম বলেই অল্পের জন্য স্লিপে ধরা পড়েননি এনামুল হক। তবে কিছুক্ষণ পরই অফ স্টাম্পের বাইরের বলে গালিতে ক্যাচ দেন তিনি।
জাকিরেরও কঠিন পরীক্ষা নেন হাসান ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। শেষ বিকেলে সীমানার কাছে শুয়ে তাদের বোলিং উপভোগ করেন টেইট। তবে আর উইকেট নিতে পারেননি তারা।
২ ছক্কায় ২৭ বলে ১৬ রানে অপরাজিত জাকির। ৮ বলে ৫ রান নিয়ে নামবেন মাহমুদুল হাসান জয়।