টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
Published : 03 Jun 2024, 11:45 PM
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বছর দেড়েক ধরে ভীষণ বাজে সময় কাটছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। আগের ১৩ ম্যাচের ১১টিতে হার, সবশেষ সিরিজে সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার হতাশা। সবকিছু পেছনে ফেলে তারা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল বিশ্ব মঞ্চে। আনরিক নরকিয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে শুরু হলো তাদের বিশ্বকাপ অভিযান।
মাত্র ৫ মাসে তৈরি হওয়া নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের উপলক্ষ রাঙাল দক্ষিণ আফ্রিকা। সোমবার ‘ডি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়ারা জিতল ৬ উইকেটে।
এই সংস্করণে নিজেদের সর্বনিম্ন ৭৭ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ভারতের বিপক্ষে ২০১৬ সালে ৮২ ছিল তাদের আগের আগের সর্বনিম্ন।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ড্রপ-ইন পিচে দক্ষিণ আফ্রিকাও সহজে রান করতে পারেনি। ১৭তম ওভার পর্যন্ত খেলতে হয় তাদের, লক্ষ্য স্পর্শ করে ২২ বল বাকি থাকতে।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে জয়ের নায়ক নরকিয়া। ৪ ওভারে স্রেফ ৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ৩০ বছর বয়সী এই পেসার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কারও সেরা বোলিং এটি। আগের সেরাও ছিল নরকিয়ার, গত আসরে সিডনিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তাদের ইনিংস গতি পায়নি কখনোই। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম বলে পাথুম নিসাঙ্কাকে ফিরিয়ে চতুর্থ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ওটনিয়েল বার্টমান।
অষ্টম ওভারে প্রথম বল হাতে পান নরকিয়া। তিন ওভারের প্রথম স্পেলে প্রতি ওভারে তিনি ধরেন একটি করে শিকার। কামিন্দু মেন্ডিস, কুসাল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট নেন তিনি। মাঝে এক ওভারে পরপর দুই বলে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও সাদিরা সামারাউইক্রামাকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজ।
প্রথম ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে স্রেফ ২টি চারে শ্রীলঙ্কা করতে পারে ৪০ রান। এই সংস্করণে কোনো ম্যাচে প্রথম ১০ ওভারে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ এটি। ২০২১ সালে কলম্বোয় ভারতের বিপক্ষে ২ উইকেটে ৪২ ছিল আগের সর্বনিম্ন।
একটি ছক্কা মেরেই বিদায় নেন দাসুন শানাকা। আরেক সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ২ ছক্কায় করেন ১৬ রান। কোটার শেষ ওভারে তাকে ফিরিয়ে চতুর্থ শিকার ধরেন নরকিয়া। এরপর দ্রুত শেষ দুই ব্যাটসম্যানকেও হারায় শ্রীলঙ্কা।
নরকিয়ার ৪টি ছাড়া নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২টি করে শিকার ধরেন আরেক পেসার কাগিসো রাবাদা ও স্পিনার মহারাজ। বিশ্বকাপ অভিষেকে ৪ ওভারে একটি মেইডেনে স্রেফ ৯ রানে একটি উইকেট নেন বার্টমান। ডট বল খেলান তিনি ২০টি।
লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে রিজা হেনড্রিকসকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক এইডেন মারক্রামও।
২৭ বলে ২০ রান করে ফেরেন কুইন্টন ডিক কক। ট্রিস্টান স্টাবস ১৩ রান করতে খেলেন ২৮ বল। ৫৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর বাকিটা সারেন হাইনরিখ ক্লসেন ও ডেভিড মিলার।
টানা তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে বিশ্বকাপে পা রাখে শ্রীলঙ্কা। তবে শুরুটা খুব বাজে হলো তাদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ১৯.১ ওভারে ৭৭ (নিসাঙ্কা ৩, কুসাল মেন্ডিস ১৯, কামিন্দু মেন্ডিস ১১, হাসারাঙ্গা ০, সামারাউইক্রামা ০, আসালাঙ্কা ৬, ম্যাথিউস ১৬, থিকশানা ৭*, পাথিরানা ০, থুশারা ০; ইয়ানসেন ৩.১-০-১৫-০, রাবাদা ৪-১-২১-১, বার্টমান ৪-১-৯-১, মহারাজ ৪-০-২২-২, নরকিয়া ৪-০-৭-৪)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৬.২ ওভারে ৮০/৪ (ডি কক ২০, হেনড্রিকস ৪, মারক্রাম ১২, স্টাবস ১৩, ক্লসেন ১৯*; মিলার ৬*; ম্যাথিউস ৩-০-১৬-০, থুশারা ৩-০-১৮-১, শানাকা ৩-১-৬-১, পাথিরানা ৩-০-১২-০, হাসারাঙ্গা ৩.২-০-২২-২, থিকশানা ১-০-৩-০)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: আনরিক নরকিয়া