ইংলিশ ক্রিকেট
Published : 01 Oct 2024, 08:26 PM
ইংল্যান্ডের জন্য যেন জাদুকর হয়ে এসেছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। তার ছোঁয়ায় বদলে গেছে লম্বা সময় ধরে ধুঁকতে থাকা তাদের টেস্ট দল। সম্প্রতি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতেও কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নিউ জিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ককে। তার হাত ধরে সাদা বলেও ইংল্যান্ড দল পুনরুজ্জীবিত হবে, বিশ্বাস দলটির সাবেক ব্যাটসম্যান দাভিদ মালানের।
২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে ইংল্যান্ড। ঘরে তুলেছে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপাও। কিন্তু এরপর থেকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংলিশদের সময়টা একদমই ভালো কাটছে না। নিজেদের যেন হারিয়ে খুঁজছে দলটি।
ওয়ানডেতে সেরার মুকুট ধরের রাখার অভিযানে নেমে ২০২৩ বিশ্বকাপে প্রাথমিক পর্বই পার হতে পারেনি ইংল্যান্ড। গত জুনে শিরোপাধারী হিসেবে টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক আসরে তাদের পথচলা থেমে যায় সেমি-ফাইনালে।
দলের এমন ব্যর্থতায় সাদা বলের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান ম্যাথু মট। এরপর ম্যাককালামকে বাকি দুই সংস্করণেরও কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় ইংল্যান্ড। টেস্টের পাশাপাশি আগামী জানুয়ারিতে ভারত সফর দিয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে কাজ শুরু করবেন সাবেক এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান।
ম্যাককালাম দায়িত্ব নেওয়ার আগেই অবশ্য অন্তর্বর্তীকালীন কোচ মার্কাস ট্রেসকোথিকের কোচিংয়ে দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জস বাটলারের অনুপস্থিতিতে ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেন হ্যারি ব্রুক। ইংল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে এই সংস্করণে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়কত্ব করেন ফিল সল্ট। এই সংস্করণে অভিষেক করানো হয় জর্ডান কক্স, জ্যাকব বেথেল ও জেমি ওভারটনকে। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ১-১ ড্র হয়। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডের সিরিজে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩-২ ব্যবধানে হারে ইংল্যান্ড।
গত অগাস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া মালান রয়টার্সকে বলেন, সাদা বলে পুনরায় বিশ্ব সেরা হতে তরুণ ও অভিজ্ঞদের নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল গড়তে হবে ইংল্যান্ডকে।
“দল পুনর্গঠন করতে এবং সাদা বলের ক্রিকেটে আবারও বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি হয়ে ওঠার জন্য ইংল্যান্ডের মানসম্পন্ন ক্রিকেটার আছে। কোন খেলোয়াড়কে সুযোগ দিতে হবে এবং কোন সিনিয়র খেলোয়াড়দের ধরে রাখতে হবে, এসব ঠিকঠাক মতো করে দলের ভারসাম্য খুঁজে বের করতে হবে।”
২০২২ সালের মে মাসে ওই সময়ে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি থাকা ইংল্যান্ড টেস্ট দলের দায়িত্ব নেন ম্যাককালাম। তার কোচিংয়ে দ্রুত দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ইংলিশরা। লাল বলে শুরু করে আগ্রাসী ক্রিকেট, একের পর এক সাফল্যও আসতে থাকে। টেস্টে ইংল্যান্ডের এই ধরন পরিচিতি পেয়ে গেছে ‘বাজবল’ নামে, যা এসেছে ম্যাককালামের ডাকনাম ‘বাজ’ থেকে।
ম্যাককালাম দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৯ টেস্টের মধ্যে ১৯টিই জিতেছে ইংল্যান্ড। ৯ সিরিজের মধ্যে তাদের জয় ছয়টিতে। এই সময়ে কেবল একটি সিরিজই হারে তারা, চলতি বছরের শুরুতে ভারতের মাটিতে।
মালানের বিশ্বাস, রঙিন পোশাকেও এবার দেখা যাবে ‘বাজবল।’ টেস্টের মতো সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেও ইংল্যান্ডকে পুনর্জীবিত করতে পারবেন ম্যাককালাম।
“দল পুনর্গঠন ও লেগ্যাসি তৈরিতে এবং খেলোয়াড়দের বেড়ে ওঠা ও সফল হওয়ার জন্য সঠিক পথ তৈরিতে ম্যাককালাম দুর্দান্ত। টেস্ট দলের কোচ হিসেবে তিনি দারুণ কাজ করেছেন।”
“আশা করি, সাদা বলেও তিনি তার জাদু দেখাতে পারবেন এবং বড় বড় ক্রিকেটারদের আবার রানে ফেরাতে পারবেন। আপনি তরুণদের নিয়ে যা খুশি বলতে পারেন…কিন্তু সিনিয়র খেলোয়াড়রা যদি পারফর্ম করতে না পারে, তাহলে ক্রিকেটে ম্যাচ জিততে পারবেন না।”
অক্টোবরে পাকিস্তানে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ইংল্যান্ড। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তারা খেলবে তিনটি ওয়ানডে ও পাঁচটি টি-টোয়েন্টি। নভেম্বরের শেষ দিকে শুরু হবে নিউ জিল্যান্ড সফরে তিন টেস্টের সিরিজ।
এরপর আগামী ২২ জানুয়ারি পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজ দিয়ে শুরু হবে ইংল্যান্ডের ভারত সফর। সেখানে তিনটি ওয়ানডেও খেলবে তারা। এই সিরিজ দিয়েই ইংলিশদের সীমিত ওভারের কোচের দায়িত্ব শুরু করবেন ম্যাককালাম।