Published : 31 May 2025, 08:31 AM
সিঙ্গল নিতে গিয়ে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি। এরপরই প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত দেখা যাচ্ছিল লিটন কুমার দাসকে। মেজাজের সঙ্গে হারিয়ে ফেললেন বুঝি মনোযোগও। পরের বলেই বাজে এক শটে আউট! ডাগআউট ফেরার সময়ও বেশ গজরাতে দেখা যাচ্ছিল তাকে। স্বাভাবিক হচ্ছিলেন না এমনকি পরেও। ব্যাপারটি এমনই দৃষ্টিকটূ ছিল যে, ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ককে এটা নিয়ে প্রশ্নও করলেন ধারাভাষ্যকার ও সঞ্চালক রামিজ রাজা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশে রান তাড়ায় ষষ্ঠ ওভারের ঘটনা সেটি। হাসান আলির ডেলিভারি আলতো করে খেলেই রানের জন্য ছুটতে থাকেন লিটন। তিনি দুই দফায় ‘কল’ করলেও তাকে ফিরিয়ে দেন অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যান হৃদয়।
লিটন ততক্ষণে অনেকটা দূর চলে এসেছেন। ক্রিজে থমকে দাঁড়িয়েই তিনি হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে বেশ রেগে কিছু একটা বলেন। এরপর পড়িমরি করে ছুটতে তাকেন ক্রিজে। বিপদ হতে পারত, তবে শেষ পর্যন্ত রান আউট হননি বাংলাদেশ অধিনায়ক।
নিরাপদ ঠিকানায় পৌঁছে আবার হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে হাত উঁচিয়ে কিছু বলতে দেখা যায় লিটনকে।
ধারাভাষ্যে থাকা রামিজ রাজা তখন বলেন, “লিটন তো (উইকেটে) সঙ্গীর ওপর অগ্নিশর্মা, সিঙ্গল নিতে মরিয়া ছিলেন তিনি।” আরেক ধারাভাষ্যকার আমির সোহেল তখন বলেন, “আমার মনে হয়, হৃদয় ঠিক কাজই করেছেন। এটা কোনোমতেই রান হওয়ার মতো ছিল না, রান নিতে গেলে বিপদ হতে পারত।”
পরের বলেই হাসান আলির বল মিড অনে তুলে দিয়ে আউট হন লিটন। হাত থেকে ব্যাট ফেলে দেন তিনি। বেশ ক্ষিপ্ত হয়ে গ্লাভস খুলতে দেখা যায় তাকে। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময়ও খানিকটা যেন ফুঁসছিলেন। দুই ধারাভাষ্যকার আলোচনা করছিলেন, আগের বলের ঘটনা থেকে বের হতে না পেরে মেজাজ হারিয়েই হয়তো উইকেট হারালেন তিনি।
রামিজ রাজা বলেন, “দিস ইজ নট ডান। মাঠে অনেক সময় অনেক কিছু হয়, সতীর্থদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিও নিয়মিতই হয়। এসব সময়ই তো টেম্পারমেন্টের পরীক্ষা। এভাবে মেজাজ হারানো উচিত নয়।” পাশ থেকে তখন আমির সোহেল যোগ করেন, “বিশেষ করে অধিনায়ক হলে আরও বেশি উচিত নয়।”
ডাগআউটে গিয়ে বসার পর ক্যামেরায় কাছ থেকে ধরা হলো তাকে। পাথুরে মুখে তাকিয়ে ছিলেন তিনি সামনে। ধারাভাষ্যকাররা বলছিলেন, তখনও সম্ভবত হৃদয়ের সঙ্গে ঘটনার রেশ থেকে বের হতে পারেননি লিটন।
এমনকি ম্যাচ শেষেও যখন মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন লিটন, তার মুখায়ব ও শরীরী ভাষা দেখে রামিজ রাজা বললেন সেই একই কথা।
পুরস্কার বিতরণীয় আয়োজনে সঞ্চালক রামিজ এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনার উইকেট নিয়ে কি বলবেন? নন-স্ট্রাইকার সেই সিঙ্গল না নেওয়ায় আপনাকে বেশ রাগান্বিত মনে হচিছল, পরের বলে আউট হয়ে আপনাকে বেশ উত্তেজিত মনে হচ্ছিল। এটা কি হয়েছে?”
লিটন অবশ্য সায় দিলেন না। তবে অসন্তুষ্টি বুঝিয়ে দিলেন পরের কথাগুলোয়।
“ঠিক তা নয়। তবে ক্রিকেটে মৌলিক কাজ করতে হবে। এটা ছিল মৌলিক ব্যাপার। এই মুহূর্তে আমরা মৌলিক কাজগুলি করতে পারছি না। পরপর দুটি উইকেট যদি দেখেন, আমরা দুটি রান নেইনি। আমি দোষ দিচ্ছি না, তবে এসব দিকে মনোযোগ দিতে হবে আমাদের।”
৯ বলে ৬ রান করে আউট হন লিটন। পরের ওভারেই হৃদয় ফেরেন ৫ বলে ৫ করে। বিনা উইকেটে ৪৪ রানে থাকা বাংলাদেশ পরের ৩৩ রান তুলতেই হারায় ৭ উইকেট।
পরে তানজিম হাসান ৯ নম্বরে নেমে ৩০ বলে ফিফটি করলেও ম্যাচটি ৫৭ রানে হেরে সিরিজ হেরে যায় বাংলাদেশ।