Published : 27 May 2025, 07:12 PM
চোট কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরে কাউন্টি ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য ফর্মে থাকা ক্যামেরন গ্রিনের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলা প্রায় নিশ্চিত। কোন জায়গায় তিনি ব্যাট করবেন, সেটিই এখন বড় কৌতূহল। অস্ট্রেলিয়া কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড বললেন, শীর্ষ ছয়ের যেকোনো পজিশনে ব্যাট করার সামর্থ্য আছে ২৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের।
গ্রিন সবশেষ টেস্ট ক্রিকেটে খেলেছেন ২০২৪ সালের মার্চে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই সিরিজে ওয়েলিংটন টেস্টে চার নম্বরে নেমে অপরাজিত ১৭৪ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
গত সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডে সীমিত ওভারের সিরিজ থেকে চোট নিয়ে ফেরার পর তার পিঠে অস্ত্রোপচার হয়। সাত মাস পর গত মাসে মাঠে ফেরেন কাউন্টি ক্রিকেট দিয়ে। গ্লস্টারশায়ারের হয়ে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন তিনি। ৯ ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন তিনটি। আছে অপরাজিত ৬৭ রানের একটি ইনিংসও।
আপাতত গ্রিনের পরিচয় শুধুই ব্যাটসম্যান। বছরের শেষ দিকে অ্যাশেজের আগ পর্যন্ত তিনি বোলিং করতে পারবেন না।
লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার ‘এসইএন’ রেডিওতে আলাপে ম্যাকডোনাল্ড নিশ্চিত করে দিলেন, স্টিভেন স্মিথ চার নম্বরে থাকবেন, শীর্ষ ছয়ের যেকোনো পজিশনে দেখা যাবে গ্রিনকে।
“সে (গ্রিন) তিন নম্বরে ব্যাট করতে পারে, পাঁচে থাকতে পারে, ছয়ে থাকতে পারে, সে ওপেন করতে পারে। আমার মনে হয়, তার সেই টেম্পারমেন্ট আছে। তার দক্ষতা আছে। সে রক্ষণাত্মকও খেলতে পারে। আমার মনে হয়, যত ওপরে ব্যাটিংয়ের কথা বলবেন, তত রক্ষণাত্মক সামর্থ্য অগ্রাধিকার পাবে।”
একাদশে গ্রিনের অন্তর্ভুক্তি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। শ্রীলঙ্কা সফরে উসমান খাওয়াজার সঙ্গে ট্রাভিস হেডকে ওপেন করানো হয়েছিল বিশেষ ভাবনা থেকে। স্যাম কনস্টাসকে তাই একাদশের বাইরে থাকতে হয়েছিল। লর্ডসে হেড সম্ভবত ফিরে যাবেন পাঁচ নম্বরে।
অস্ট্রেলিয়ার সবশেষ তিনটি টেস্ট সিরিজে খাওয়াজার ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে দেখা গেছে স্মিথ, হেড, কনস্টাস ও ন্যাথান ম্যাকসুয়েনিকে।
সিডনিতে টেস্ট অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে ছয় নম্বরে দারুণ করেছিলেন অলরাউন্ডার বাউ ওয়েবস্টার। শ্রীলঙ্কায়ও এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ভালো খেলেছেন। তবে ম্যাকডোনাল্ড জানিয়ে দিয়েছেন, লর্ডসে একাদশে ওয়েবস্টারের জায়গা নিশ্চিত নয়। সেখানে পঞ্চম বোলারের প্রয়োজন কি না, তা ভাবছেন নির্বাচকরা।
জশ ইংলিসের ফর্মও বিবেচনার বিষয়। শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট অভিষেকে ৯০ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। সব সংস্করণেই বেশ ছন্দে আছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি একবার বলেছিলেন, ইংলিস ওপেন করতে পারেন। যদিও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কখনও এই ভূমিকায় দেখা যায়নি তাকে।
মার্নাস লাবুশেনকে ওপেনিংয়ে খেলানো হবে কি না, এমন প্রশ্নে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি অস্ট্রেলিয়া কোচ। টেস্ট ক্রিকেটে কখনও দলের ইনিংস শুরু করেননি ৩০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। ২০১৯ সাল থেকে তিন নম্বর পজিশনটি তার জন্য একরকম নির্ধারিত। এখন পর্যন্ত ৫৭ টেস্টে তার সেঞ্চুরি ১১টি। তবে সবশেষ ২৯ ইনিংসে সেই স্বাদ আর পাননি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই চক্রে তার ব্যাটিং গড় কেবল ২৮.৩৩।
ফাইনালের আগে তাই অনেক বিষয় নিয়েই ভাবতে হবে অস্ট্রেলিয়ার টিম ম্যানেজমেন্টকে। ক্রিকেট তীর্থে আগামী ১১ জুন শুরু হবে এই লড়াই।