Published : 07 May 2025, 01:45 PM
দারুণ খেলতে খেলতে হঠাৎই ভুল করে বসলেন নুরুল হাসান সোহান। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ক্যাচ তুলে দিলেন ফাইন লেগে। কিন্তু সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না জ্যাক ফোকস। জীবন পেয়ে পরের ওভারেই জোড়া ছক্কা মেরে নব্বইয়ে পৌঁছে গেলেন সোহান। পরে তিন অঙ্ক ছুঁতে বেশি সময় নিলেন না এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে অধিনায়কের সেঞ্চুরির উদযাপন দেখার কিছুক্ষণ পর এই মাইলফলক স্পর্শ করেন মাহিদুল ইসলাম। শতক ছোঁয়ার ইনিংসে চতুর্থ উইকেটে দুজন মিলে গড়েন বিশাল জুটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে সোহান ও মাহিদুলের সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ৩৪৪ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
ইনিংসের ১৬তম ওভারে জুটি বেঁধে ৪৭তম ওভার পর্যন্ত একসঙ্গে খেলেন সোহান ও মাহিদুল। সোহানের বিদায়ে এই বন্ধন ভাঙার আগে ১৯৩ বলে আসে ২২৫ রান।
দেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে চতুর্থ উইকেটে এর চেয়ে বড় জুটি আছে আর একটি। ২০১৩ সালের প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ২৭৬ রানের জুটি গড়েছিলেন মুমিনুল হক ও রোশেন সিলভা। চতুর্থ উইকেট জুটির বিশ্ব রেকর্ডই সেটি।
গত মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দারুণ ছন্দে থাকা সোহান ধারাবাহিকতা ধরে রেখে খেলেন ১১২ রানের ইনিংস। ১০১ বলে ৭টি করে চার-ছক্কা মারেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি তার সপ্তম সেঞ্চুরি। সবশেষ ৯ ইনিংসেই ৩ বার তিন অঙ্কের জাদুকরী স্পর্শ পেলেন ৩১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
প্রিমিয়ার লিগে বেশ ভালো খেললেও সেঞ্চুরি পাননি মাহিদুল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে চমৎকার ব্যাটিংয়ে তিনি খেলেন ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস। ফর্ম ধরে রেখে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করেন তিনি। শেষ ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে ৭ চার ও ৫ ছক্কায় খেলেন ১০৮ বলে ১০৫ রানের ইনিংস।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পারভেজ হোসেনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি এনামুল হক ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ। নিজের ভুলে রান আউট হয়ে ফেরেন ৩৪ বলে ৩৯ রান করা এনামুল। নাঈমের ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৪০ রান।
৯৭ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর জুটি বাঁধেন মাহিদুল ও সোহান। শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন সোহান। প্রথম ২২ রানের মধ্যে ৩টি ছক্কা মারেন অধিনায়ক।
অন্য প্রান্তে রানের জন্য ভুগতে থাকেন মাহিদুল। পরে তিন ওভারের মধ্যে দুটি ছক্কা মেরে চাপ কিছুটা দূর করেন তিনি।
আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে ৫৩ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন সোহান। একই ছন্দে এগিয়ে তিন অঙ্কে পৌঁছাতে তার লাগে আর ৩৯ বল। ব্যক্তিগত ৮০ রানে ক্লার্কের বলে তার ক্যাচ ছাড়েন ফোকস। পরে ক্লার্কের বলেই মিড অফে ক্যাচ দিয়ে থামে তার ইনিংস।
রয়েসয়ে শুরু করা মাহিদুল ফিফটি করতে খেলেন ৬৮ বল। পরে দ্রুতই বলের সঙ্গে রানের ব্যবধান ঘুচিয়ে নেন ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। পরের পঞ্চাশ করতে আর মাত্র ৩৫ বল লাগে তার।
তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগে মাহিদুলও ভাগ্যের সহায়তা পান। জশ ক্লার্লসনের বলে ৯১ রানে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন জো কার্টার। জীবন পেয়ে আর ঝুঁকি না নিয়ে কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক স্পর্শ করেন মাহিদুল।
সোহানের বিদায়ের পর শেষ দিকে প্রত্যাশিত দ্রুততায় রান না আসায় সাড়ে তিনশ হয়নি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের।