Published : 12 Feb 2025, 08:11 PM
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া হত্যা মামলায় মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
তবে তার রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের চতুর্থ মহানগর হামিক মোহাম্মদ মোস্তফা এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলামকে গত বুধবার দুপুরে ঢাকায় গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মফিজুল হক ভুঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চান্দগাঁও থানায় শিক্ষার্থী তরুয়া হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। পাশাপাশি সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
“গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিলেও আদালত রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
এর আগে বুধবার দুপুরে সাবেক সিএমপি কমিশনারকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন সিএমপির উপ-কমিশনার (ক্রাইম) রইছ উদ্দিন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর সময় গত বছরের ৪ জুলাই সিএমপির ৩২তম কমিশনার হিসেবে যোগ দেন সাইফুল ইসলাম। এর আগে তিনি এমআরটি পুলিশের ডিআইজি, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সরকার পতনের পর পুলিশে রদবদলের মধ্যে সাইফুলকেও চট্টগ্রাম থেকে বদলি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামে সংঘাতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়। এসব ঘটনায় থানা ও আদালতে অর্ধশতাধিক মামলা হয়। যেগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তাদেরও আসামি করা হয়।
হৃদয় চন্দ্র তরুয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রতন চন্দ্র তরুয়ার সন্তান হৃদয়। বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া পেশায় কাঠমিস্ত্রি। চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
আন্দোলনের সময় গত ১৬ জুলাই চান্দগাঁও এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে আহত হয়েছিলেন হৃদয় চন্দ্র। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
পরে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর হৃদয়ের বন্ধু দাবি করে আজিজুল হক নামের একজন বাদী হয়ে নগরীর চান্দগাঁও থানায় ২০৬ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহেনা, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, দিলীপ কুমার আগরওয়াল, খাগড়াছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি নুরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার সাইফুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহকে আসামি করা হয়।