Published : 27 Aug 2024, 06:02 PM
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘিরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে চার দফায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও সন্ত্রাসী তৎপরতার নিন্দা জানিয়েছেন ক্লাবের সদস্য ২৭০ জন সাংবাদিক। দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এত কিছুর পরও আমরা চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। দুর্বৃত্তরা বিষয়টিকে দুর্বলতা মনে করে বার বার একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে চর দখলের মতো দখল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।”
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে অভিযোগ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
সেখানে বলা হয়েছে, “অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় প্রেস ক্লাবের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব দলমত নির্বিশেষে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। সদস্যদের কল্যাণের পাশাপশি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এ অঞ্চলের মানুষের মত প্রকাশ করার একটি বড় প্লাটফর্ম।
“কিন্তু গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা অন্তত ৪ দফায় গত ৫, ৬, ১২ এবং ১৪ অগাস্টে হামলা চালিয়ে প্রেস ক্লাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। দেশীয় অস্ত্র, হাতুড়ি-শাবল নিয়ে ফটকের তালা ভেঙে তারা বার বার ক্লাবে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়।
“এসব অপকার্যক্রম সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধংসের নামান্তর বলেই সাংবাদিকরা মনে করে। ”
এসব ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় জিডি করার পাশপাশি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ১৫ অগাস্ট মামলা করার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে।
এছাড়া সন্ত্রাসী হামলার প্রতিকার চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র ও মক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
বিবৃতে বলা হয়েছে, “চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত আবেদন করে প্রতিকার চাওয়া হয়। কিন্তু সিভিল প্রশাসন বা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অদ্যাবধি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হামলাকারীরা আরও উন্মত্ততা দেখানোর অপচেষ্টা করছে এবং এতে করে ক্লাবের সদস্য তথা সাংবাদিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
“গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য যেখানে ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছে, সরকার পতন হয়েছে সেখানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের মত দেশের একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে।”
সাংবাদিকরা বলছেন, “চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসহ সংবাদপত্র ও প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা চরম উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ক্লাবের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
দৈনিক আমাদের সময় সম্পাদক আবুল মোমেন, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ম. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, দৈনিক সুপ্রভাত সম্পাদক রুশো মাহমুদ, দৈনিক চট্টগ্রাম মঞ্চ সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক ও দৈনিক নয়াবাংলা সম্পাদক জিয়াউদ্দিন এম এনায়েত উল্লাহ রয়েছেন বিবৃতিদাতাদের মধ্যে।