Published : 28 Jun 2024, 01:28 AM
‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’ অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করছেন ১ হাজার ৭৩৬ জন; বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বৃহস্পতিবার জনশুমারি ও গৃহগণনার জেলা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান জানান, ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলার মোট জনসংখ্যা ৯১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ১১৩ জন এবং নারী ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ৪২৬ জন।
২০১১ সালে চট্টগ্রামের জনসংখ্যা ছিল ৭৬ লাখ ১৬ হাজার ৩৫২ জন। সে হিসেবে ১১ বছরে চট্টগ্রাম জেলার জনসংখ্যা বেড়েছে ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ১১৩ জন।
জনশুমারির তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রাম জেলায় ১৯৯১ সালে জেলায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাস করতেন ১ হাজার ২ জন। ২০০১ সালে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১ হাজার ২৫২ জন এবং ২০১১ সালে সেই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৪২ জন, ২০২২ সালের শুমারিতে ২৯৪ জন বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৭৩৬ জন।
চট্টগ্রাম জেলায় পুরুষ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং নারীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ২০১১ সালে জেলার গড় বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ।
চট্টগ্রাম জেলায় মুসলিম জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। হিন্দু ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ, বৌদ্ধ ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, খ্রিষ্টান দশমিক ০৯ শতাংশ এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী দশমিক ০৩১ শতাংশ।
জেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ৯৫ হাজার ১১৩ জন, যা জেলার মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ০৪ শতাংশ।
জনশুমারির তথ্য প্রকাশের অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুর বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব দেবদুলাল ভট্টাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চন্দন কুমার পোদ্দার উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষরতার হার ৮১ শতাংশ
২০২২ সালের জনশুমারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলায় সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের সাক্ষরতার হার ৮১ দশমিক ০৬ শতাংশ। পুরুষের সাক্ষরতার হার ৮২ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতা হার ৭৮ দশমিক ২২ শতাংশ।
গ্রামের তুলনায় শহরে সাক্ষরতার হার বেশি। শহরে এই হার ৮৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৭৮ দশমিক ২২ শতাংশ।
এক দশক আগের তুলনায় চট্টগ্রাম জেলায় শহরে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। সবশেষ জরিপে জেলার মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ২৮ শতাংশ বাস করেন নগরীতে। আর ৪৬ দশমিক ৭২ শতাংশ মানুষ বাস করেন গ্রামে।
চট্টগ্রাম জেলার মধ্যে শহর এলাকায় বসবাস করেন ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৬ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস করেন ৩২ লাখ ৩০ হাজার ২৬২ জন।
এ জেলার গ্রামাঞ্চলে বাস করেন ৪২ লাখ ৮৪ হাজার ২৪৯ জন। উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬ লাখ ৪২ হাজার ৭৬ জন ফটিকছড়ির বাসিন্দা। সবচেয়ে কম মানুষের উপজেলা কর্ণফুলীতে ২ লাখ ৩ হাজার ৬৯৭ জনের বসবাস।
জেলার বস্তিতে বাস করে ৩ লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় থাকে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮২৫ জন। ভাসমান ২ হাজার ১৬২ জনও শুমারির অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
ইন্টারনেট ব্যবহার
জনশুমারি অনুসারে, জেলার ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৭৭ দশমিক ০৭ শতাংশের নিজস্ব ব্যবহারের মোবাইল ফোন আছে।
এই বসয় সীমার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫৮ দশমিক ৮২ শতাংশই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এই বয়সীদের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৩৫ দশমিক ২১ শতাংশ।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী
শুমারির প্রতিবেদন অনুসারে, জেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ আছে ৪৮ হাজার ২৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৫ হাজার ১৬৫ জন এবং নারী ২৩ হাজার ৮০ জন।
জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফটিকছড়ি উপজেলায় ১২ হাজার ৮৭৭ জন এবং রাঙ্গুনিয়াতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৮৭ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করেন।
চট্টগ্রাম থেকে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৬৮ হাজার বিদেশে অবস্থান করছেন। আর বিদেশ থেকে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরেছেন ৩০ হাজার ৪৪৫ জন প্রবাসী।