Published : 09 Jun 2024, 04:44 PM
চট্টগ্রামে নিখোঁজের একদিন পর এক শিশুর লাশ পাওয়া গেছে খালে।
রোববার নগরীর বন্দর থানার পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গা ও আবিদার পাড়ার মাঝামাঝি এলাকার খাল থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুর লাশটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের ধারণা, সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা বক্স ড্রেনের ঢাকনা খোলা থাকায় শিশুটি খেলতে গিয়ে খালে পড়ে যেতে পারে।
নিহত সাইদুল ইসলাম ওই এলাকার রিকশা চালক আলী আকবরের ছেলে।
বন্দর থানার ওসি মনজুর কাদের মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিশুটি শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিল। সকালে স্থানীয় লোকজন খালে শিশুটির লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
সাইদুলের বোন আঁখি আক্তার মিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার মা বাকপ্রতিবন্ধী। মা, নানির সঙ্গে তারা দুই ভাই-বোন থাকেন। রিকশা চালক বাবা আলী আকবর আরেকটি বিয়ে করে আলাদা থাকেন।
শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সাইদুল বাসা থেকে বের হয়েছিল। বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় রাতে তার মা-নানি ও আশেপাশের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেছিল। সকালে নালায় তার লাশ পাওয়া যায়।
মিম জানায়, তার ভাই সাইদুল ওই এলাকার আগ্রাবাদ শিশু নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়তো। আর মিম দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, সিডিএ’র জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় খালটির পাশে প্রাচীর তৈরি করে বক্স করা হয়েছে, যেটির উপর দিয়ে স্থানীয়রা চলাচল করে। দুই দিন আগে সেখান থেকে ঢাকনাগুলো তুলে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের ধারণা, শনিবার সন্ধ্যায় শিশুটি খুলে ফেলা ঢাকনার গর্ত দিয়ে পড়ে যায়। সেখান থেকে লাশ ভেসে গিয়ে সকালে খোলা জায়গায় চলে যায়।
শিশুর মৃত্যুর খবর শুনে ঘটনাস্থলে যান সিডিএ জলাবদ্ধতা প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ।
তিনি বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খাল সংস্কার ও বক্স ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। আমরা জানতে পেরেছিলাম, বক্স ড্রেনের ওপর লোডেড ট্রাক যাবার কারণে কয়েকটা স্ল্যাবের ক্ষতি হয়েছে। নির্মাণ ত্রুটিরও অভিযোগ কিছুটা পেয়েছিলাম। এগুলো খতিয়ে দেখার জন্য আমি ৫-৬টা স্ল্যাব তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিই।”
খুলে ফেলা ঢাকনা দিয়ে শিশুটি খালে পড়ে যেতে পারে বলে স্থানীয়রা যে ধারণা করছেন, তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে প্রকল্প পরিচালক ফেরদৌস বলেন, “শনিবার রাত ৮টার দিকে ৫-৬টা স্ল্যাব তুলে নেয়া হয়। শিশুটি কিন্তু নিখোঁজ হয়েছে বিকাল ৫টার দিকে। আর আমাদের স্ল্যাব তোলা হয়েছে রাত ৮টার দিকে। তাহলে শিশুটির স্ল্যাবের অংশে ড্রেনে পড়ে নিখোঁজের সম্ভাবনা মোটামুটি নেই বললেও চলে।
“তারপরও যেহেতু বক্স ড্রেনের মাত্র ২০০ গজ দূরে খালে লাশটা পাওয়া গেছে, আমরা কিন্তু সেটা বলছি না। আরও একটা বিষয় খেয়াল করবেন, গত এক সপ্তাহ ধরে কিন্তু বৃষ্টি নেই। খালের পানি, ড্রেনের পানি একেবারে স্ট্রেইট আছে। এখানে পড়ে গিয়ে স্রোতে তলিয়ে যাবার সুযোগ নেই। আশা করি, পুলিশের ইনভেস্টিগেশনে সবকিছু পরিষ্কার হবে।”