Published : 16 Jul 2024, 09:25 PM
ফেইসবুকে ‘চলে আসুন ষোলশহর’ স্ট্যাটাস দিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে গিয়েছিলেন চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরাম।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে স্ট্যাটাস দেন ওয়াসিম, আর সাড়ে ৪টার দিকে ষোলশহর সেখান থেকে খবর আসে তিনি মারা গেছেন। সেই স্ট্যাটাসের নিচে অনেককে শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বার্তা লিখতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে ওয়াসিমসহ নিহত হয়েছেন তিনজন।
মৃত্যুর পরপর ওয়াসিমকে ছাত্রদলের নেতা বলে দাবি করেছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।
মহানগরের দপ্তর সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইদ্রিস আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, নিহত ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তার বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মেহেরনামা এলাকায়।
ওয়াসিমের ফেইসবুক প্রোফাইলে নিজের পরিচয়ে খেলা রয়েছে, তিনি চট্টগ্রাম কলেজ ও পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
সোমবার রাতে ওয়াসিম ফেইসবুকে পাঁচটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আমার প্রাণের সংগঠন। আমি এই পরিচয়ে শহীদ হব।”
ছবিগুলোতে দেখা গেছে, আরও কয়েকজনের সঙ্গে হাতে স্ট্যাম্প নিয়ে মিছিল করছেন ওয়াসিম।
পুলিশ বলছে, মঙ্গলবার বিকালে নগরীর মুরাদপুর থেকে ষোলশহর পর্যন্ত এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন। ওয়াসিম ছাড়া অন্য দুজনের মধ্যে একজন ছাত্র। তিনি ওমরগণি এমইএস কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমদ শান্ত (২০)। আরেকজন স্টিল ফার্নিচার দোকানের শ্রমিক মো. ফারুক।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাসপাতালে দুইজনের লাশ গেছে। নিহত পথচারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও ছাত্রের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তাদের মুরাদপুর ও ষোলশহর এলাকা থেকে আনা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পরে আরও একটি লাশ হাসপাতালে পাওয়া যায়। তার পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।”
নিহত তৃতীয় ব্যক্তি ফয়সাল ওমরগণি কলেজের ছাত্র বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা দুপুরে ষোলশহর রেলস্টেশনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়েছিল সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
আন্দোলনকারীরা ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে মুরাদপুর মোড়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা হয়। তখন আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
দুই পক্ষের মধ্যে ঢিল ছোড়াছুড়ি শুরু হলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সড়কে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পুলিশ দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে।