Published : 02 Jun 2025, 04:28 PM
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় রাতের আঁধারে একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, শনিবার গভীর রাতে শতাধিক লোকজন এসে মন্দিরটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পাশাপাশি মন্দিরের সীমানার ভেতর দেয়াল তৈরি করে।
জায়গা দখলে নিতেই এ ধরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তাদের ধারণা তাদের।
দুই যুগেরও বেশি পুরনো এ মন্দির কারা ভেঙেছে, কারা এ জায়গা দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে সে বিষয়ে কিছুই ‘বুঝতে পারছেন না’ বলে দাবি মন্দির কমিটির সদস্যদের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার জঙ্গল ছলিমপুর ৩০০ হিন্দু পরিবারের বসবাস। সেখানে পাঁচটি মন্দির আছে।
আক্রান্ত মন্দিরটি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর সমাজ এলাকায় অবস্থান।
সাধারণের কাছে এটি ‘মহাশ্মসান কালী ও শিব মন্দির’ নামে পরিচিত। পাহাড়ি টিলা এ এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মৃতদেহ সৎকার হয় আর উপরে কালী ও শিব মন্দির।
মন্দির কমিটির সম্পাদক অজয় মজুমদারের ভাষ্য, সরকারি খাস জমিতে দুই যুগ আগে এ মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এ জমির মালিকানা নিয়ে কারো সঙ্গে বিরোধও নেই। শনিবার গভীর রাতে ‘বেশকিছু’ লোকজন গিয়ে কেন এ মন্দিরে আগুন দিয়ে ভষ্মীভূত করা হয়েছে সেটা তারা বুঝতে পারছেন না।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, মন্দিরটি টিন শেডের ছিল। সেখানে সিমেন্ট ও মাটির তৈরি দুইটি কালী মূর্তি, একটি শিব মূর্তি ছিল। সম্প্রতি মন্দিরটি পাকা করার জন্য তারা কাজ শুরু করেছেন এবং পিলারও দেয়া হয়েছে।
“শনিবার গভীর রাত তিনটা থেকে চারটার মধ্যে বেশকিছু লোক এসে মন্দিরের সীমানার মধ্যে দেয়াল নির্মাণ করেন এবং সিমেন্টের তৈরি কালী মূর্তিটি পাশের এক জনের প্লটে ফেলে দিয়ে মন্দিরে আগুন জ্বালিয়ে দেন।”
ঘটনার সময় প্রবল বৃষ্টির কারণে লোকজন টের পায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “পরে সিমেন্টের তৈরি মূর্তি ভাঙার শব্দে লোকজন টের পায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায় “
এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে মন্দির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ।
যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, রাত তিনটা থেকে চারটার মধ্যে মন্দিরের টিনশেড ঘর ভেঙে পাশ্ববর্তী এক জায়গায় ফেলে দেয় এবং বাঁশের খুঁটি ও বেড়ায় আগুন দেওয়া হয়।
এলাকায় কারো সাথে তাদের বিরোধ নেই উল্লেখ করে জিডিতে অভিযোগ করা হয়, মন্দিরের জায়গা দখল নিতে কিছু লোক পাঁয়তারা করছে বলে তাদের ধারণা।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, “ঘটনা শুনেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এটি স্পর্শকাতর ঘটনা। তাই গুরুত্বসহকারে বিষয়টি নিয়েছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন।”
সোমবার মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়রা বলছে, এটা জায়গা দখলের পাঁয়তারা। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু হয়েছে।”