Published : 21 May 2025, 09:45 PM
আড়াই বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসার পর অবশেষে মূল ক্যাম্পাসে ফিরছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট। ইতোমধ্যে স্থানান্তরের কার্যক্রমও শুরু হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার থেকে মূল ক্যাম্পাসে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তবে বিভিন্ন বর্ষের চলমান পরীক্ষাগুলো শহরের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট সভায় হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে চারুকলাকে স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের নিচতলা ও চতুর্থতলায় চারুকলার জন্য শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসেই চারুকলা বিভাগের কার্যক্রম চলত। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১০ সালের অগাস্ট মাসে চারুকলা নগরীর বাদশা মিয়া সড়কে অবস্থিত চারুকলা কলেজ চারুকলা বিভাগের সঙ্গে এক হয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট নামে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ ও ইনস্টিটিউট হাটহাজারীর মূল ক্যাম্পাসে হলেও চারুকলা ইনস্টিটিউটের অবস্থান ছিল ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম শহরে।
২০২২ সালে শ্রেণিকক্ষের ছাদ থেকে ইট-সিমেন্ট খসে পড়লে ওই বছরের ২ নভেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন করে মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। সেসময়ের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকের পরও মূল ক্যাম্পাসে ফেরার আন্দোলনে অনড় ছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এক মাসের জন্য ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করে। পরে মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরদিন নগরীর বাদশা মিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে ব্যানার বিছিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান। এ পরিস্থিতিতে ১২ ডিসেম্বর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ‘নীতিগতভাবে একমত’ বলে জানিয়েছিল।
চলতি বছরের ২১ এপ্রিল চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফেরাতে অনশন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় সমাবর্তনের পরে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হবে।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছে। এর পাশাপাশি স্থানান্তর কার্যক্রম চলছে। মূল ক্যাম্পাসে অফিস কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
চারুকলার শিক্ষার্থীদের আবাসনের বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, শহরের ক্যাম্পাসের হল খোলা থাকবে। শিক্ষার্থীরা আপাতত সেখানে থাকতে পারবে। মূল ক্যাম্পাসের আবাসিক হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য যেভাবে সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়, চারুকলার শিক্ষার্থীদেরও একইভাবে বরাদ্দ দেওয়া হবে।