Published : 09 Jun 2023, 09:50 PM
প্রচণ্ড গরমে তীব্র লোডশেডিংয়ের মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আশা দেখাচ্ছিল, পরীক্ষামূলক উৎপাদনে থাকা সেই কেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ আসা বন্ধ হয়ে গেল।
কেন্দ্রটি থেকে নিয়মিত বিদ্যুৎ আসতে আরও দেড় সপ্তাহের মত সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
কয়লা সঙ্কটে পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের দিন ২৪ মে এই কেন্দ্রটি পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। সেদিন ১২০ মেগাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কেন্দ্রটি।
এর মধ্যে গত ৫ জুন পায়রার দ্বিতীয় ইউনিটও বন্ধ হয়ে যায়। তাতে আরও অবনতি হয় বিদ্যুৎ পরিস্থিতির। এর দুই দিন পর এসএস পাওয়ার থেকে আসা ৩২০ মেগাওয়াট কিছুটা হলেও লাঘব করে দুর্ভোগের।
কিন্তু ঠিক এর পরদিন বৃহস্পতিবার এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে যায় কয়লা না থাকার কারণে। কেন্দ্রটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা এখনও বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাইনি। বিদ্যুৎ বিভাগের অনুরোধে চালু করেছিলাম। কয়লা এলে পুনরায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।”
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড- পিডিবি চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের স্টকে থাকা কয়লার প্রথম চালান শেষ হয়ে গেছে। বিদ্যুতের ক্রাইসিস থাকায় কয়েক দিন সাপোর্ট দিয়েছে।”
কবে নাগাদ কয়লা আসবে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষই তা বলতে পারবে মন্তব্য করে রেজাউল করিম বলেন, “১৮ জুন নাগাদ কয়লার পরবর্তী চালান আসবে বলে শুনেছি।”
বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আবহাওয়া কিছুটা ঠাণ্ডা হয়েছে। তাতে চাহিদা কমায় লোডশেডিং পরিস্থিতি তুলনামূলক সহনীয় পর্যায়ে আছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার এমনিতেই বিদ্যুতের চাহিদা থাকে কম। তাই ঘণ্টায় ঘণ্টা বিদ্যুতের যাওয়া আসার বিষয়টি দেখা যাচ্ছে না।
পিডিবির ওয়েবসাইটে শুক্রবার পিক আওয়ারে দিনে সম্ভাব্য চাহিদা দেখানো হয়েছে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। সন্ধ্যায় সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা দেখানো হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৩ হাজার মেগাওয়াট।
বাঁশখালীর এসএস পাওয়ারের ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে
কর্মদিবসে এই সর্বোচ্চ চাহিদা ১৬ থেকে ১৭ হাজার মেগাওয়াট উঠে যায়।
বিদ্যুৎ বিভাগের ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১২ হাজার ৬৭৭ মেগাওয়াট। সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১৪ হাজর ৬৫৫ মেগাওয়াট।
এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের উপ-প্রকল্প পরিচালক ফয়জুর রহমান আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, কয়লার প্রাপ্যতা অনুসারে এক নম্বর ইউনিটটি ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। একই সক্ষমতা সম্পন্ন দুই নম্বর ইউনিটের কমিশনিং কার্যক্রম চলছে।
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে ইউনিট সংখ্যা দুটি। এর নির্মাণ কাজ এরই মধ্যে শেষ। বাণিজ্যিক উৎপাদন পুরোদমে শুরু হলে ইউনিট দুটি থেকে ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে।
এসএস পাওয়ার ওয়ান লিমিটেড বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানি, যার বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ প্রায় ২.৬ বিলিয়ন ডলার। কোম্পানির ৭০ শতাংশ মালিকানা বাংলাদেশের এস আলম গ্রুপের এবং বাকি ৩০ শতাংশ চীনা কোম্পানি সেপকো থ্রির।
এটিই ব্সেরকারি খাতে দেশে সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র।