Published : 24 Dec 2023, 07:38 PM
আইনপ্রণেতা হওয়ার বসনায় চাকরির তথ্য গোপন করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার এক স্বাস্থ্য সহকারী। বিষয়টি জানার পর তার বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
মোহাম্মদ সালা উদ্দিন সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডের নড়ালিয়া গ্রামের নুর সোলায়মানের ছেলে। সীতাকুণ্ডের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি চট্টগ্রাম-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়নপত্রে তিনি সরকারি চাকরির তথ্য গোপন করে নিজের পেশা দেখিয়েছেন ব্যবসা।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ১ শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিল থাকায় তার প্রার্থিতা বাতিল করেছিলেন জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান সালা উদ্দিন। ভোটে লড়তে তিনি ‘রকেট’ প্রতীক পেয়ে প্রচারও শুরু করেন।
সীতাকুণ্ডের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. নুর উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোহাম্মদ সালা উদ্দিন আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত। সরকারি চাকরির নিয়ম অনুসারে চাকরিতে থেকে তিনি প্রার্থী হতে পারেন না। বিষয়টি আগেই উনাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
“উনার প্রার্থিতা বাছাইয়ে বাতিল হওয়ার পর তিনি আদালতে যান। প্রার্থী হতে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রে তিনি পেশা ব্যবসা উল্লেখ করেছেন। আদালত থেকে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এরপর প্রতীকসহ উনার ছবি দিয়ে পোস্টার ছাপানো হয়েছে।”
কর্মক্ষেত্রে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় মোহাম্মদ সালা উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর উদ্দিন বলেন, “অনুপস্থিতির কারণে তার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি সিভিল সার্জন মহোদয়কে আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।”
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শোকজ করা হলেও স্বাস্থ্য সহকারী মোহাম্মদ সালা উদ্দিন জবাব দেননি। মাঠে তার পোস্টার দেখা গেছে রকেট প্রতীকে। ওই আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার, নির্বাচন কমিশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি।”
২০১২ সালের ১৫ নভেম্বর মোহাম্মদ সালা উদ্দিন স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেন।
সরকারি চাকরিতে থেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে সালা উদ্দিন প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে ও প্রশ্ন শুনে বলেন, “আমি এখন গাড়িতে আছি। পরে আপনার সাথে কথা বলব।”
পরে আবারও ফোন করা হলে সালা উদ্দিন তা ধরেন। কিন্তু প্রতিবেদকের পরিচয় দেওয়ার পর তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
চট্টগ্রামের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উচ্চ আদালতের নির্দেশে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান এবং তাকে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। এখন নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।”
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে মোহাম্মদ সালা উদ্দিনসহ মোট ৮ জন প্রার্থী আছেন।