Published : 18 Jun 2025, 09:52 PM
উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নদীর পানিপ্রবাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সমন্বিত অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন’ প্রকল্প নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি তিনি এ নির্দেশ দেন বলে তার কার্যালয় থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিতে নির্দেশনা দেন। বলেন, “আমাদের অবশ্যই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে আমাদের নদীপ্রবাহকে। বাংলাদেশ একটি ব-দ্বীপ। আমরা কোনোভাবেই আমাদের পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে চাই না।
“আরেকটি বিষয় হলো, যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ওই এলাকার জনসংখ্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। আমাদের দেশ বন্যাপ্রবণ। তাই পানিপ্রবাহ বন্ধ করে এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবে। বন্যার সময় আমাদের দেশের মানুষ উঁচু রাস্তা, সেতু ও রেলপথে আশ্রয় নেয়। সুতরাং সেতু শুধু নির্মাণ করলে হবে না, এটি জনগণের জন্য আশ্রয় হচ্ছে না কি বিপদ ডেকে আনছে সেটাও বিবেচনা করতে হবে।”
‘আন্তর্জাতিক সংযোগকে’ তৃতীয় কারণ হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা এ অঞ্চলে একটি ইনভেস্টমেন্ট হাব তৈরি করতে চাই। সেজন্য প্রকল্প এমন হতে হবে, যা নেপাল ও ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকেও সংযুক্ত করবে।”
বৈঠকে এ উন্নয়ন প্রকল্পে পানি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করতে এবং একটি মহাপরিকল্পনা তৈরির নির্দেশও দেন তিনি।
বৈঠকে সড়ক ও সেতু এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “এর আগে হাওর এলাকায় বিশাল সড়ক নির্মাণ হয়েছে কিন্তু পরে দেখা গেল সেটি ওই অঞ্চলের পুরো ইকোসিস্টেমকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ মারাত্মকভাবে বন্যার কবলে পড়েছে। সুতরাং যেকোনো প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করতেই হবে।”
বৈঠকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জোং ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের একটি দল প্রকল্পের বিস্তারিত রূপকল্প, কৌশল ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া উপস্থাপন করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।