Published : 07 Jul 2024, 09:40 PM
ভারতের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী কিশোর কুমারকে নিয়ে বায়োপিক তৈরি হচ্ছে বলে যে খবর এসেছিল গত বছর, সেই কাজ এগোয়নি বলে জানিয়েছেন তার ছেলে শিল্পী অমিত কুমার।
কলকাতার সংবাদমাধ্যম ‘এই সময়’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমিত বলেন, “তার (কিশোর কুমার) বায়োপিক নিয়ে কোনো ঘোষণা দেওয়ার সময় হয়নি। কাজটি সে জায়গায় পৌঁছায়নি।”
রাণবীর কুমার পর্দায় কিশোর কুমার হচ্ছেন বলে নিজেই জানিয়েছিলেন গত বছর। বলেছিলেন, কিশোরের জীবনীভিত্তিক সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন বলিউডের নির্মাতা অনুরাগ বসু। এবং এই কাজটির পেছনে গত ১১ বছর ধরে লেগে আছেন বলেও জানিয়েছিলেন ঋষি কাপুরপুত্র।
কেবল বাংলা বা হিন্দি নয়, মারাঠি, গুজরাটি, অহমিয়া, মালয়ালম, ওড়িয়া, ভোজপুরি ও কন্নড় ভাষাতে অজস্র গান গেয়েছেন কিশোর কুমার। গায়ক এবং অভিনেতা ছাড়াও চিত্র্যনাটকার, পরিচালক, প্রয়োজক একং সুরকার হিসেবেও তাকে পেয়েছে ভারতের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি। তবে সিনেমায় তার অভিনীত বেশিরভাগ চরিত্রই ছিল কমেডি ধাঁচের।
কিশোর এবং অভিনেত্রী রুমা গুহঠাকুরতার ছেলে অমিত জানালেন, তার বাবার বায়োপিক নির্মাণ করার ব্যাপারে শুরুতে তার মত ছিল না।
“কারণ ওই মানুষটি যেমন ছিলেন, তাকে নিয়ে সিনেমা তৈরি করা খুব কঠিন। বড় অভিনেতাদের পক্ষেও কিশোর কুমারের চরিত্র ফুটিয়ে তোলা কঠিন।”
সত্যজিৎ রায়ের ভাইঝি রুমা ছিলেন কিশোরের প্রথম স্ত্রী। ১৯৫০ সালে তাদের বিয়ে হয়। এবং আট বছরের মাথায় এই দম্পতির বিচ্ছেদ ঘটে। তবে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল অমিতের। এই শিল্পী, অভিনেতা ও সংগীত পরিচালকের ৭২তম জন্মবার্ষিকী গেছে বুধবার।
ভালো অ্যারেঞ্জমেন্টের গানের সুযোগ কম
এবারের জন্মদিনে প্রকাশ হয়েছে অমিতের ‘বন্ধু’ শিরোনামের একটি গান। শ্রীরাজ মিত্রর লেখা এবং রকেট মণ্ডলের সুরে গানটি প্রকাশ হয়েছে অমিতের ইউটিউব চ্যানেলে।
কলকাতার প্রেক্ষাপটে এই গান তৈরি হয়েছে জানিয়ে কিশোরপুত্র বলেন, “কলকাতার ভালো-মন্দ দুদিক থাকার পরও, আমি শহরটার ওপরে টান অনুভব করি। বাবার সঙ্গে যখন মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিল, তখন মায়ের সঙ্গে কলকাতায় থাকতে শুরু করলাম।
“প্রথমে লেক এভিনিউ, তারপর রাজা বসন্ত রায় রোডে থেকেছি। বালিগঞ্জে থাকতে শুরু করলাম তারপর। ওই যে জার্নিটা, সেটার সঙ্গে এই গানটার মিল আছে। সেই কারণেই আমার ভালো লেগেছে গানটা। ইমোশনাল সং। দর্শকের সেই জায়গা থেকেই গানটা ভালো লাগবে, আশা করছি।”
গানের একাল সেকাল নিয়ে অমিত কুমার বলেন, “আজকাল দর্শন অনুভব করে গান লেখা, গাওয়া এগুলো কম হয়। যে রকম ৪০ বছর আগে হত। এখন যখন স্টেজে পারফর্ম করি, তখন হিট গানই গাইতে হয়। আমার গাইতে ভালো না লাগলেও, কিছু এমন গান আছে, যেটা দর্শকদের শোনাতে হয়। আমার ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ মেলোডি। ভালো অ্যারেঞ্জমেন্ট যে গানের। সেরকম গান গাওয়ার সুযোগ কম হয়। অফবিট সুর, লেখা খুঁজি। তাই এবার এরকম একটা গান বেছে নিলাম।”
নিজের ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে অমিত বলেন, “টেকনোলজির প্রভাবে যা হচ্ছে, সব কিছু আমার ভালো লাগে তা নয়। তবে মুখ ফিরিয়ে থাকতে রাজি নই। ২০১২ থেকে আমার ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে একা লড়ছি। ২ লাখ ৭৫ হাজারের কাছাকাছি জেনুইন সাবস্ক্রাইবার। এই সংখ্যাটা ৫ মিলিয়ন করতে গেলে কী লাগে, সেই গেমটা জানি না। আমি সহজ মানুষ। তবে অনুরাগীদের সমর্থন সব সময়ে পাই।”