Published : 04 Jan 2025, 07:30 PM
“অঞ্জনা যে এভাবে এত তাড়াতাড়ি আমাদের ছেড়ে চলে যাবে একটুও বুঝতে পারিনি; অঞ্জনাকে কোনোদিন অসুস্থ দেখিনি, শরীর খারাপ দেখিনি, ওষুধ খেতে দেখিনি,” ছোটবেলার বান্ধবীকে হারিয়ে এভাবেই বলছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানকে হারিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে গলা ধরে আসছিল বাংলাদেশের সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনার। বলছিলেন, “আমরা তো অনেক ছোটবেলার বান্ধবী, একদম অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু ছিলাম আমরা।"
অঞ্জনাকে শেষবারের মত দেখতে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এসেছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। সেখানে বন্ধুত্ব শুরুর দিনগুলো স্মরণ করে তিনি বলেন, "আমাদের যখন ছয় বা সাত বছর বয়স তখন থেকেই আমরা বন্ধু। আমরা একই ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে ক্লাসিক্যাল গান শিখতাম। অঞ্জনা তো একসময় গান শিখত।"
চ্যানেল আইয়ের প্রাঙ্গণে জানাজার আগে চলচ্চিত্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএফডিসিতে প্রথম জানাজা হয় ঢাকাই চলচ্চিত্রের সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নৃত্যশিল্পী অঞ্জনা রহমানের। পরে বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
তাদের বন্ধুত্বের গল্প প্রায়ই উঠে আসত অঞ্জনার ফেইসবুক পোস্টে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা, বান্ধবীর সুস্থতায় খোলা চিঠিসহ দুজনের আগের দূরন্ত বন্ধুত্বের নানান মুহূর্তের ছবি পোস্ট করতেন অভিনেত্রী।
ছোটবেলায় নাচ ও গানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে যেতেন তারা। দুজনের বন্ধুত্বের এ গভীরতা ছিল বড় হয়েও।
সেই গল্প তুলে ধরে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, "আমরা বড় হওয়ার পরও একসঙ্গে ছিলাম, আমি গান করতাম, ও তো তখন নায়িকা। বিদেশে যখন যেই অনুষ্ঠানে গিয়েছি আমরা সবার থেকে আলাদা হয়ে যেতাম।
”একসঙ্গে একই রুমে থাকতাম, একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতাম। একদম অভিন্ন হৃদয় ছিলো আমাদের। অঞ্জনার চলে যাওয়ার খবর ভিতরটা ভারি করে তুলেছে।"
ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে ১টা ২০ মিনিটে অঞ্জনা মারা যান।
এ অভিনেত্রীকে বুধবার রাত থেকে হাসপাতালে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
রক্তের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া, ফুসফুসে পানি আসা, ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়া, এর মধ্যেই স্ট্রোক হওয়াসহ নানা জটিলতা তৈরি হয় অভিনেত্রীর। এক পর্যয়ে তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়া হয়। যে অবস্থা থেকে আর ফেরানো যায়নি সিনেমা ও নাচে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই শিল্পীকে।
আরও পড়ুন:
অঞ্জনার ঠাঁই হল বনানী কবরস্থানে
ছন্দ-ঘুঙুরের যে জীবন ধরা দিয়েছিল সেলুলয়েডে
চেনা আঙিনায় কফিনবন্দি হয়ে এলেন অঞ্জনা, শেষ শ্রদ্ধা সতীর্থদের