Published : 15 Jun 2025, 08:07 PM
বাবা কামরুল হাসান ছবি আঁকতেন; ‘পটুয়া’ কামরুল হাসান নামে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি তার। কিন্তু মেয়ের কাছে তিনি বাবা, এক আবাগের নাম।
এবারের বাবা দিবসে প্রয়াত কামরুল হাসানকে স্মরণ করে গান প্রকাশ করেছেন সুমনা হাসান।
‘কতদূরে বাবা তোমার বাড়ি’ শিরোনামে গানটি রোববার প্রকাশ হয়েছে প্যারাডাইস সাউন্ড নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে।
এ উপলক্ষে কাওরানবাজারের ডেইলি স্টার সেন্টারে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। কামরুল হাসানের চিত্রকর্ম দিয়ে সাজানো হয় অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ।
অনুষ্ঠানে সুমনা হাসান বলেন, “বাবাকে নিয়ে তো সবারই আবেগ থাকে, সেই আবেগ থেকেই গানটি করেছি। বাবা ছবি আঁকতেন, আমি বাবাকে এই গানের মধ্য দিয়ে স্মরণ করছি। এটি কেবল বাবার স্মরণে কন্যার গান নয়, দুই প্রজন্মের সেতুবন্ধন, শিল্প-সংস্কৃতির উত্তরাধিকারের এক অনন্য নিদর্শন।”
শারীরিক অসুবিধা, বিশেষত কণ্ঠস্বরের সীমাবদ্ধতা থাকার পরও সুমনা তার অন্তরের ভেতর জমে থাকা ভালোবাসা, শোক আর শ্রদ্ধা তুলে এনেছেন এই গানে।
সুমনা বলেন, “প্রথমে চেয়েছিলাম গানটি অন্য একজন শিল্পীর কণ্ঠে প্রকাশ করতে। কিন্তু আমার সংগীতগুরুর অনুপ্রেরণায় নিজেই গানটি করেছি।”
গানের সংগীত পরিচালনা করেছেন ডি কে এম শান্ত। সংগীতায়োজন করেছেন ওয়াহেদ শাহীন। ভিডিওগ্রাফী ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে ছিল থার্ড আই।
কামরুল হাসান বা আবু শরাফ মোহাম্মদ কামরুল হাসানের জন্ম ১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর কলকাতায়। পৈতৃক নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার নারেঙ্গা গ্রামে।
‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ শিরোনামে পাকিস্তানের সামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের রক্তপায়ী, হিংস্র মুখমণ্ডল সম্বলিত একটি পোস্টার এঁকে তিনি বাংলার গণমানুষের দাবিকে উজ্জীবিত করেছিলেন।
১৯৭২ সালে কামরুল হাসান বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইন করা জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপ দেন।
কর্মজীবনে কামরুল হাসান ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ঢাকা চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেন। পরে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের নকশাকেন্দ্রের প্রধান নকশাবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে সেখান থেকে অবসর নেন।
তাছাড়াও তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও বেতার দপ্তরের শিল্প বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।
চিত্রকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার, কুমিল্লা ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, চারুশিল্পী সংসদ সম্মান, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং কাজী মাহবুবউল্লাহ ফাউন্ডেশন পুরস্কারসহ অনেক সম্মাননা।
১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ‘দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে’ শিরোনামের স্কেচ অঙ্কন শেষ করার কয়েক মিনিট পরেই তিনি মারা যান।