Published : 10 Jun 2025, 01:51 PM
সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে ফের ভক্তদের মাঝে ফিরে এসেছেন জনপ্রিয় কে-পপ ব্যান্ড বিটিএসের দুই তারকা শিল্পী আরএম এবং ভি।
রয়টার্স লিখেছে, মঙ্গলবার সামরিক ঘাঁটির কাছে অপেক্ষারত ভক্তদের সামনে যখন সামরিক পোশাক পরা আরএম এবং ভি এসে উপস্থিত হন, আনন্দের হুল্লোড় ওঠে সেখানে। দুই শিল্পীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন অনেকে। কেউ কেউ গেয়ে ওঠেন বিটিএসের জনপ্রিয় কয়েকটি গানের কলি। অনেক ভক্ত আনন্দে কেঁদেও ফেলেন। এছাড়া প্রায় প্রত্যেককে মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে দেখা গেছে তাদের পছন্দের গায়কদের ফিরে আসার মুহূর্তটি।
শিগগিরই তাদেরকে গানের মঞ্চে পাওয়া যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই দুই শিল্পী।
দেশের আইন উপেক্ষার উপায় নেই, তাই সামরিক প্রশিক্ষণে যেতে হয়েছিল আরএম ও ভিকে। সেসব সেরে ফিরে এসে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ভি।
শ্রোতাদের উদ্দেশে ভি বলেন, “আপনাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন দেখা নেই। দয়া করে আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন। আমরা সত্যিই দুর্দান্ত একটি পারফরমেন্স নিয়ে ফিরে আসব।"
কোরীয় তরুণদের এই প্রশিক্ষণ পর্বের প্রস্তুতি শুরু হয় সাধারণ ১৮ বছর বয়স থেকে। ২০ বছর বয়সের মধ্যে তাদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয় যে, আদৌ সেই তরুণ সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য উপযুক্ত কী না। পরীক্ষায় পাস করলে পরে সুবিধাজনক সময়ে টানা ১৮ মাসের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণে যেতে হয় তরুণদের।
তবে ২০২২ সালে আইন সংশোধন করে বিশেষ ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিল করে ৩০ বছর করা হয়। এই 'বিশেষ ক্ষেত্রের' মধ্যে পড়েন বিটিএসের সদস্যরা।
বিটিএসের এজেন্সি বিগহিট মিউজিক জানিয়েছিল, বিটিএসের গায়কদের সবারই সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ হচ্ছে চলতি মাসে।
গেল বছর বিটিএসের আরেক সদস্য জিন তার সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফেরেন, প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন জে-হোপও। এই দুজনকে একক কনসার্টে পাওয়া গেছে এবং বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানেও উপস্থিত হচ্ছেন তারা।
বাকিদের মধ্যে জিমিন, জাংকুক এবং সুগা তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করবেন আগামী ২১ জুনের মধ্যে।
সামরিক ঘাঁটিতে থাকার কারণে বিটিএসের গায়কদের এর মধ্যে একসাথে মঞ্চে পায়নি তাদের ভক্তরা। বিটিএস আশা করছে শিগগিরই সবাই একসাথে কোনো কনসার্টে গাজির হতে পারবেন না।
জে-হোপ গত ডিসেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমরা যে যার মত ছোট ছোট করে কিছু কাজ করেছি। আগামীতে আবার একত্রিত হচ্ছি।"
২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে বিটিএস। সে সময় তাদের ডাকা হত 'পুচকে' নামে।
সে সময় বিটিএসের বেশির ভাগ গান কোরিয়ান ভাষায়, শুরুর দিকে বিটিএসের গানে কোনো সাবটাইটেল থাকত না। পরে ইংরেজিতেও গান শুরু করে তারা। এবং জনপ্রিয়তায় দক্ষিণ কোরিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।
নিজেদের দেশ কোরিয়ায় ব্যাপক সাফল্যের পর ব্যান্ডটি প্রথমে দৃষ্টি দেয় সংগীতের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রেও। ২০১৭ সালে প্রথম কে-পপ ব্যান্ড হিসেবে পারফর্ম করে আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে।
'ম্যাপ অব দ্য সোল: পারসোনা' অ্যালবাম দিয়ে বিটিএস প্রথম কোরীয় ব্যান্ড হিসেবে ২০১৯ সালে ইউকে টপ চার্টের শীর্ষে জায়গা করে নেয়। এরপর লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দুটি শো করে। এরপর প্রথমবার বিরতিতে যায় দলটি। অবশ্য কয়েক সপ্তাহ পরই নতুন ট্যুর নিয়ে ফিরে আসে আরএম, জিনরা।
২০২০ সালে বিটিএস এর সাফল্যের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। ওই বছর তাদের তুমুল জনপ্রিয় গান ‘ডিনামাইট’ এর জন্য প্রথম কোরীয় ব্যান্ড হিসেবে বিলবোর্ড হট ১০০ টপ চার্টের শীর্ষে উঠে আসে বিটিএস। একই বছর লেডি গাগা, আরিয়ানা গ্রান্ডে, টেলর সুইফটের মত তারকাদের হারিয়ে এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে বেস্ট পপ অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার পায় দলটি।
এছাড়া ‘বাটার’ ও ‘পারমিশন টু ড্যান্স’ গানের জন্য টানা যুক্তরাষ্ট্রের সিঙ্গেল চার্টের শীর্ষে ওঠে বিটিএস। একই বছর প্রথম কোরীয় ব্যান্ড হিসেব গ্র্যামি মনোনয়ন পায় বিটিএস।
প্রথম এশীয় ব্যান্ড হিসেবে বিটিএস আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে আর্টিস্ট অব দ্য ইয়ার স্বীকৃতি পায় ২০২১ সালে।
ওই বছর গান থেকে দ্বিতীয়বারের মত বিরতি নেয় ব্যান্ডটি। তবে ফিরেও আসে আগেরবারের মত দ্রুত।