Published : 10 Jan 2025, 12:18 AM
এফডিসিতে নির্বাচন করার অনুমতি না পাওয়ায় আরেক দফা স্থগিত হল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ভোটগ্রহণ।
সহকারী নির্বাচন কমিশনার এজে রানা গ্লিটজকে বলেন, "এফডিসিতে নির্বাচন করার অনুমতি না মেলায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। রোববার আমাদের একটা মিটিং আছে, সেখানে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর পরিচালক সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও শেষ মুহূর্তে নির্বাচনের অনুমতি না পাওয়ায় তা স্থগিত হয়ে যায়। এরপর ১০ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল লতিফ বাচ্চু।
ওই সময় কারণ হিসেবে আবদুল লতিফ বাচ্চু বলেন, “কেপিআইভুক্ত (কী পয়েন্ট ইনস্টলেশন) হওয়ায় এফডিসিতে নির্বাচন করার অনুমতি দিচ্ছেন না করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।”
এফডিসিতে নির্বাচন করার অনুমতি দ্বিতীয় দফায় বাতিল হওয়ার কারণ জানতে বৃহস্পতিবার রাতে এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারাহ শাম্মীকে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
ফোন করা হয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাইফুল ইসলামকেও। তিনিও ফোন ধরেননি।
অন্যদিকে এফডিসির প্রশাসন ও অর্থ পরিচালক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ গ্লিটজকে বলেন, "এই বিষয়ে কথা বলার অনুমতি আমাদের নেই। তথ্য সচিব আমাদের কথা বলতে নিষেধ করে দিয়েছেন।”
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ২০২৫-২৬ মেয়াদের এই নির্বাচনে একটি প্যানেলের সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন শাহীন সুমন; মহাসচিব পদে প্রার্থী হয়েছেন শাহীন কবির টুটুল।
আরেক প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন মুশফিকুর রহমান গুলজার; মহাসচিব পদে প্রার্থী হয়েছেন সাফি উদ্দীন সাফি।
দ্বিতীয় দফায় ভোট স্থগিত হওয়ার বিষয়ে শাহীন সুমন বলেন, "চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি সৃষ্টির পর থেকে আমরা এই আঙ্গিনায় নির্বাচন করে এসেছি। গত ৪৩ বছরের সব নির্বাচন এফডিসিতেই হয়েছে।
“আমরা একবার তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন স্থগিত করলাম। ভেবেছিলাম পরে হয়ত আমাদের অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু এবারও একইভাবে আমাদের অনুমতি দেওয়া হল না।”
তিনি বলেন, “আমরা অনুমতির জন্য তথ্য উপদেষ্টা, তথ্য সচিব, এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সবার সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং করেছি। কিন্তু কেপিআইভুক্ত এরিয়ার কথা বলে আমাদের এখানে নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।"
এই পরিচালক বলেন, "এফডিসি কেপিআইভুক্ত এরিয়া এটা সবাই মানে। কিন্তু এই মুহূর্তে ইট-পাথরের দালান ছাড়া এফডিসিতে তেমন কিছু নেই। আমাদের বিভিন্ন ফ্লোর বাইরে ভাড়া দেওয়া, মানুষজন কাজ করছে। শুধু আমরাই পদে পদে অনেক অবহেলার শিকার।
“আমরা বিক্ষুব্ধ হতে পারতাম, কিন্তু এতে হট্টগোল ও অরাজকতা তৈরি হত। আমরা চুপ থেকেই অন্য জায়গায় নির্বাচনের কেন্দ্র খুঁজে বেড়াচ্ছি।"
স্থান নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আরেক প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মুশফিকুর রহমান গুলজার।
তিনি বলেন, "গত বছরগুলোর তুলনায় এবারের নির্বাচন একটু চ্যালেঞ্জের মুখেই হচ্ছে। আমাদের নির্বাচনের স্থান নিয়ে জটিলতা কাটেনি। গত বছরগুলোয় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোট হয়েছে। আমরা কখনো কোনো কলহ করিনি। তারপরও অনুমতি না দেওয়ার কোনো কারণ আমাদের জানা নেই।"
একই কথা বলেছেন এই প্যানেলের মহাসচিব পদপ্রার্থী সাফি উদ্দিন সাফি। তিনি বলেন, "এই নির্বাচন আমাদের মিলনমেলা। অনেক গুণী পরিচালক, অনেক জ্যেষ্ঠ সদস্য আসেন, যারা এখন সিনেমা নির্মাণ করেন না। তারা ভোটের সময় আসেন। কিন্তু এবার অনেক সদস্যই এফডিসির বাইরে নির্বাচন মেনে নিতে পারছেন না। এখনও নির্বাচনের স্থান চূড়ান্ত হয়নি।"
নির্বাচনে ১৮টি পদে দুটি প্যানেল থেকে ৩৬ জন প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯১ জন।