Published : 15 Feb 2023, 08:17 PM
ঢাকার মহাখালীতে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধল আনসার সদস্যদের।
আনসার সদস্যরা এক চিকিৎসকের ‘গায়ে হাত তুলেছেন’- এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সরকারি এই হাসপাতালে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। তাতে অন্তত নয়জন আহত হয়েছেন। সাতজন আনসার সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসাও নেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, আনসার সদস্যরা ‘সামান্য আহত’ অবস্থায় এসেছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
হাসপাতালে আনসারদের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্লাটুন কমান্ডার (এপিছি) সেকান্দর আলী জানান, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। ওইদিন ভবনের প্রশাসনিক বিভাগে নামাজের জায়গা দিয়ে ‘বুট পরিহিত অবস্থায়’ এক আনসার সদস্য পাশের ভবনে যাচ্ছিলেন। এ সময় সেখানে নামাজ পড়তে আসা এক ব্যক্তি বিষয়টির প্রতিবাদ করেন।
“পরে জানা যায়, ওই ব্যক্তি সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। চিকিৎসককে না চিনে তার সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন আনসার সদস্য। তার দাবি, ওই চিকিৎসক এক পর্যায়ে তাকে চড় মারেন।”
সেকেন্দার আলী বলেন, “সেই আনসার সদস্য ব্যারাকে এসে জানান, এক ব্যক্তি তাকে মারধর করেছেন। এরপর ৮ থেকে ১০ জন আনসার সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন।”
তবে তারা চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলেননি বলে দাবি আনসার কমান্ডার সেকেন্দারের।
সেকেন্দার বলেন, বুধবার ওই ঘটনা নিয়ে সমঝোতার জন্য তাদের ডাকা হয় বেলা ১১টার দিকে। তারা প্রশাসনিক ভবনে গেলে চিকিৎসক এবং হাসপাতালের কর্মচারীরা হামলা করে। ফলে মারামারি বেঁধে যায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
হাসপাতালটির নিরাপত্তা দেখভালে ৬০ জনের মতো আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে তাদের জন্য ব্যারাক রয়েছে। হাসপাতালের কর্মীরা আনসারদের ব্যারাকেও ভাঙচুর চালিয়েছে।
জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সমিতির সভাপতি কামাল মল্লিক বলছেন, “এক আনসার সদস্য বুট পরে নামাজের স্থান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন দেখে ওই চিকিৎসক তাকে বলেছিলেন, তিনি চাইলে জুতা খুলেও ওদিক দিয়ে যেতে পারতেন।
“এ নিয়ে নামাজ পড়তে যাওয়া সহকারী অধ্যাপক পদের চিকিৎসকের সঙ্গে আনসার সদস্য অশোভন আচরণ করেন। ওই চিকিৎসকের কলার ধরে টানাটানি করেন আনসাররা। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি হাসপাতালের আপামর চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
“পরে বুধবার আনসার সদস্যরা জোট বেঁধে হামলা চালায়। তাদের মারধরে হাসপাতালে কর্মরত বেসরকারি কোম্পানির (আউটসোর্সিংয়ের) দুজন কর্মী ও বক্ষব্যাধি হাসপাতালের একজন কর্মচারী আহত হন। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দল বেঁধে তাদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেয়।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনসারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গিয়ে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
এক রোগীর এক ছোটভাই লিখন বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, “বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে এতে রোগীদের কোনো সমস্যা হয়নি।”