Published : 17 Jun 2025, 05:54 PM
স্কুল জীবনের শুরু থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি বছর স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। প্রতিবারই একাধিক ইভেন্টে অংশ নিয়েছি। কিন্তু, কখনও কোনো পুরস্কার জিততে পারিনি।
যদিও পড়াশোনায় আমি মোটামুটি ভালো ছিলাম, তবে খেলাধুলায় বরাবরই দুর্বল ছিলাম।
যখন নবম শ্রেণিতে পড়ি তখন স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ‘রিলে দৌড়’ নামে একটি দলগত ইভেন্ট যুক্ত হয়। এই খেলায় প্রতি দলে চারজন করে প্রতিযোগী থাকে। একজন আরেকজনের হাতে রিল পৌঁছে দেয়, এভাবে করে শেষজন ফিনিশ লাইন অতিক্রম করে।
এই খেলাটি ভালো লাগায় আমি তিনজন বন্ধুকে নিয়ে দল গঠন করি। কিন্তু প্রতিযোগিতার দিন দেখা গেল, আমাদের দলের দুইজন আসেনি। তাই আমরা খেলতেই পারিনি। তখন মনে মনে ঠিক করলাম আর কখনও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেব না।
এবছরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল আমার স্কুল জীবনের শেষ প্রতিযোগিতা। তাই পুরস্কার জেতার আশা না থাকলেও ভাবলাম শেষ বারের মত চেষ্টা করি। তাই আগের দল নিয়ে অনুশীলন শুরু করি।
আমাদের চারজনের দলে পুলক ছিল প্রথম প্রতিযোগী। দ্বিতীয় ছিলাম আমি, তৃতীয় ছিল ইয়ামিন। আর ইথুন ছিল শেষ প্রতিযোগী অর্থাৎ ফিনিশ লাইন সে অতিক্রম করবে।
ইভেন্টের দিন পুলক রিলটি আমাকে দেয়, আমি দেই ইয়ামিনকে। সে হঠাৎ হোঁচট খায়। তখন আমরা তখন ভীষণ ঘাবড়ে যাই। আমি তখন চিৎকার করে বলি- দৌড়া ইয়ামিন, দৌড়া!
ইয়ামিন আবার দৌড় দেয়, এরপর সে রিল দেয় ইথুনকে। সে আবার রিল নিয়ে সবাইকে পেছনে ফেলে ফিনিশ লাইন পার হয়। আর এর মাধ্যমে আমরা প্রথম হয়ে যাই!
পুরস্কার নিতে গিয়ে আমাদের যে আনন্দ হচ্ছিল, তা দেখে কে! এই ইভেন্ট ছাড়াও আমি আরও কয়েকটি ইভেন্টে পুরস্কার পেয়েছি। বাড়িতে ফেরার পর মা এতগুলো পুরস্কার দেখে বিস্মিত হয়ে যান।
যেখানে প্লে থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আমি কিছুই জিতিনি, সেখানে শেষ বছরে এতগুলো পুরস্কার! এই আনন্দের দিনটি আমি কোনোদিন ভুলব না।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।