Published : 18 Jun 2025, 10:15 PM
আমি ছোটবেলা থেকেই কুকুর ভয় পেতাম। কুকুর দেখলেই বুক ধড়ফড় করত। দেখতাম, অনেকেই কুকুরের কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়,খাবার দেয়।
আমারও ইচ্ছে হত, কিন্তু সাহস পেতাম না। এমনকি রাস্তায় কুকুর দেখলে আমি ভয়ে রাস্তা বদলে ফেলতাম।
এই ভয় কাটতে শুরু করে যখন আমি নবম শ্রেণিতে পড়ি। আমার এক বন্ধুর বাসায় একটি কুকুর ছিল। তার নাম ছিল ডলার, তার গায়ের রং ছিল সাদা।
সেই বন্ধুর বাসায় আমরা কয়েকজন মিলে পড়তে যেতাম। সেখানে গৃহশিক্ষক আমাদের পড়াতেন। এই কারণে কুকুরটির সঙ্গে প্রায়ই দেখা হত। আমার ভয় পাওয়া দেখে ডলারকে বেঁধে রাখা হত। এছাড়াও সে তখনো পোষ মানতে শেখেনি।
কুকুরটি আমাদের পড়ার টেবিলের পাশেই বাঁধা থাকত। তার ঘেউঘেউ শব্দ শুনলেই আমি চমকে উঠতাম। একদিন গিয়ে দেখি,ডলার বাঁধা নেই। আমাকে দেখে সে লেজ নেড়ে এগিয়ে আসছে। তখন আমি খুব ভয় পেয়ে যাই।
আমার বন্ধুর বাবা তাকে দেখে বললেন, ‘এই ডলার, না ওদিকে না, এদিকে আসো, বস।’ ডলার তখন চুপচাপ গিয়ে তার পাশে বসে পড়ে।
এরপর থেকে তাকে আর বেঁধে রাখা হত না। কারণ সে তখন কথা শুনতে শিখে গিয়েছিল।
তবে সে আমার খুব কাছেই থাকত। টেবিলের নিচে আমার পায়ের পাশে শুয়ে থাকত। আমি পা উঠিয়ে বসে পড়তাম। মাঝে মাঝে তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
ধীরে ধীরে মনে হল, ডলার বুঝতে পারে আমি তাকে ভয় পাই। সে আমাকে বিরক্ত করত না। ডলার অন্যদের পায়ের আওয়াজ বা কথা শুনলেই ঘেউ ঘেউ করত। কিন্তু আমাকে দেখলে চুপ করে থাকত।
আমি মাঝেমধ্যে ওর জন্য বিস্কুট বা কেক নিয়ে যেতাম। সে খুশি হয়ে খেত। এই ডলারের কারণেই কুকুরের প্রতি আমার ভয় অনেকটা কমে গেছে। আগে রাস্তায় কুকুর দেখলে রাস্তা বদলে ফেলতাম। এখন আমি ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে পারি।
কিন্তু, ডলার এখন আর নেই। অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। তার কিছু ছোট ভিডিও আছে আমার কাছে। মাঝে মাঝে সেগুলো দেখি। ওর মায়াবী চেহারা এখনো মনে পড়ে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।