Published : 16 Jun 2025, 08:57 PM
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে যেদিন একটি রাজকীয় চেয়ারের ছবি পোস্ট করলেন, তার পরদিনই (সোমবার) দেশের মোটামুটি সবগুলো সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম: নগর ভবনে ইশরাকের সভা, ব্যানারে ‘মাননীয় মেয়র’।
সোমবার (১৬ জুন) প্রকাশিত এই খবরের সঙ্গে যুক্ত একটি ছবি নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়—যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি অনুষ্ঠান মঞ্চের মধ্যমণি হয়ে বসে আছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। তার দুই পাশে বসে আছেন আরও ছয় জন। তদের পেছনে টানানো ব্যানারে লেখা: ‘পরিচ্ছন্ন ঢাকা ও নাগরিক সেবা নিশ্চিতকল্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিম সভা। প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। মাননীয় মেয়র ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।’
অর্থাৎ মেয়র হিসেবে শপথ না নিয়েও করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মেয়র পরিচয়ে মতবিনিময় করেছেন বিএনপির তরুণ নেতা ইশরাক হোসেন—যার বাবা প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের একজন জনপ্রিয় মেয়র।
ইশরাকের এই অনুষ্ঠানের আগের দিন রোববার স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নিজের ফেইসবুকে চেয়ারের প্রতীকী ছবিটা শেয়ার করে সিটি করপোরেশনের মেয়রের চেয়ারটি ফাঁকা আছে এবং সেখানে বসার জন্য ইশরাকের তৎপরতাকে বুঝিয়েছেন বলে অনেকেই মনে করেন। আসিফ নিজেও এই পোস্টের নিচে কমেন্টে লিখেছেন: ‘চেয়ারটা কোথায় পাওয়া যাবে কারো জানা থাকলে জানাবেন। দুঃখিত এটা ক্যাপশনে দিতে ভুলে গেছি।’ অর্থাৎ তিনি যে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে বা বিশেষ কাউকে ইঙ্গিত করে একটি শূন্য রাজকীয় চেয়ারের ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করেছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অনেক মনে করেন, তিনি এই চেয়ারের ছবি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বুঝিয়েছেন। তবে এই পোস্টের নিচে অনেকেই উপদেষ্টা পদে থেকে আসিফ মাহমুদের এরকম পোস্ট দেওয়া উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন।
আসিফ কাকে ইঙ্গিত করে চেয়ারের এই প্রতীকী ছবিটি ফেইসবুকে শেয়ার করেছেন, সেটি নিশ্চিত না হলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের সঙ্গে তার যে একটা বিরোধ বা দূরত্ব আছে—সেটি সাম্প্রতিক নানা বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে। ফলে এই চেয়ারের ছবি শেয়ার করার পরদিনই ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পরিচয়ে একটি অনুষ্ঠান মঞ্চের চেয়ারে ইশরাকের বসে যাওয়া কিছুটা ইঙ্গিতবাহী তো বটেই।
প্রশ্ন হলো, আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ পড়ার আগে ইশরাক কী করে নিজেকে মেয়র ঘোষণা করলেন বা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই বা কী করে ব্যানারে তাক ‘মাননীয় মেয়র’ হিসেবে উল্লেখ করলেন? এটি কি আইনসিদ্ধ? তার চেয়ে বড় প্রশ্ন, সরকার চাইলেও কি এখন আর ইশরাককে শপথ পড়িয়ে পড়িয়ে মেয়রের চেয়ারে বসাতে পারবে? যদি না পারে তাহলে ইশরাক যা করছেন, সেটি রাজনীতিতে কী বার্তা দিচ্ছে এবং এর পরিণতি কী হতে পারে?
সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, ১৬ জুন দুপুরে নগর ভবনের মিলনায়তনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় সভার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইশরাক সাংবাদিকদের বলেন, কেবল নগর ভবন নয়, যেকোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালে আয়োজকরা ব্যানারে তার নামের আগে মেয়র লেখেন। তিনি বলেন, এটি তার নয়, ‘জনগণের দাবি’। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে সেখানে স্পষ্টভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমাকে ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ইশরাক সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নও তাতে যোগ দেয়। মাঝে ঈদ ঘিরে ছুটির কদিন নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের আন্দোলনে পাওয়া যায়নি। ঈদের ছুটির শেষে অফিস খোলার প্রথম দিন রোববার ফের সেখানে আন্দোলন শুরু করেন ইশরাক সমর্থকরা। সে সময় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেবা কার্যক্রমে অচলাবস্থা কাটাতে নিজের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন ইশরাক। জন্ম নিবন্ধন সনদসহ দৈনন্দিন জরুরি সব সেবা চালু থাকার ঘোষণা দিয়ে ইশরাক বলেছিলেন, অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবে না।
শপথের সময় আছে?
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত পয়লা জুন। কেননা ২০২০ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন। শপথ গ্রহণ করেন ২৭ ফেব্রুয়ারি। ১৬ মে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২ জুন প্রথম সভা হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৬ ধারায় বলা হয়েছে, করপোরেশনের মেয়াদ এটি গঠিত হওয়ার পর তার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ হতে পাঁচ বছর হবে। সে হিসেবে গত পয়লা জুন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে। আওয়ামী লীগের পতন না হলেও গত পয়লা জুনের পরে শেখ ফজলে নূর তাপসের মেয়াদও শেষ হয়ে যেতো। সুতরাং সরকার চাইলেও এখন আর ইশরাককে মেয়র পদে শপথ পড়াতে পারবে কি না—সেটি বিরাট আইনি প্রশ্ন। এই সিদ্ধান্ত এখন আদালতকেই দিতে হবে যে, ইশরাককে এখন আর শপথ পড়ানো যাবে কি না এবং যদি পড়ানো যায় তাহলে তিনি কতদিন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন? তিনি কি শপথ গ্রহণের পর থেকে পাঁচ বছর মেয়র থাকবেন? যদি তাই হয় তাহলে যে পাঁচ বছর এরইমধ্যে অতিবাহিত হয়ে গেলো, সেটি কি অবৈধ বলে গণ্য হবে? এই সময়ের মধ্যে সিটি করপোরেশন যেসব কাজ করেছে, সেগুলো কি অবৈধ হয়ে যাবে? এটি একটি অসম্ভব ব্যাপার। তাহলে এখন ইশরাককে সরকার কোন যুক্তিকে বা আইনের কোন এখতিয়ার বলে মেয়র পদে বসাবে?
মামলা নিষ্পত্তি হলো না কেন?
২০২০ সালের নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ইশরাক ফলাফল ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন এবং পরবর্তীতে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে মামলাটি ঝুলে ছিল।
জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পরে দেশের রাজনীতির হিসাব-নিকাশ বদলে যাওয়ার পরে গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক ইশরাকের পক্ষে রায় দেন। রায়ে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপসের মেয়র হিসেবে ঘোষণার গেজেট বাতিল করা হয় এবং ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু ডিএসসিসি এলাকার বাসিন্দা মামুনুর রশীদ ১৪ মে হাইকোর্টে রিট করে ট্রাইব্যুনালের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। এরপর ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা নগর ভবন অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।
সিটি করপোরেশন আইনের ৩৮ ধারায় বলা হয়েছে, নিবার্চনী ফলাফল গেজেটে প্রকাশের ত্রিশ দিনের মধ্যে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা যাবে এবং ট্রাইব্যুনাল নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো মামলা ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। এই ধারায় আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মামলার রায় ঘোষণার ত্রিশ দিনের মধ্যে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করা যাবে এবং আপিল ট্রাইব্যুনালও ১৮০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবে এবং আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
প্রশ্ন হলো, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল কেন ইশরাকের মামলাটি পাঁচ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখলো বা নিষ্পত্তি করলো না? সরকারের গ্রিন সিগন্যাল ছিল না বলে? আদালত যদি স্বাধীন হয়ে থাকে তাহলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে কেন সরকারের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষা করতে হবে বা তাকে কেন ভয় পেতে হবে? জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন না হলে আদালত কি ইশরাকের পক্ষে রায় দিতো? তার মানে আদালতের রায় নির্ভর করে কোন সরকার ক্ষমতায় আছে তার ওপর? ইশরাকের মামলাটি ধরে এখন এই প্রশ্নটি তোলারও সময় হয়েছে।
কেন শপথ পড়ানো হলো না?
দ্বিতীয় প্রশ্ন, ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের পরেও সরকার কেন ইশরাককে শপথ পড়ালো না? গত ২১ মে রাতে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে সমর্থক ও অনুসারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে ইশরাক বলেছিলেন, অনেকেই হয়তো মনে করতে পারেন ঢাকায় নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শুধু একজন ব্যক্তিকে মেয়রের পদে বসানোর জন্য। কিন্তু আসলে তা নয়। এই আন্দোলন কোনো এক ব্যক্তির ক্ষমতা বা কোনো একটি পদের জন্য লড়াই নয়। আজকের এই লড়াই নির্ধারণ করে দেবে যে এই বছর ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আমরা আদৌ একটি নির্বাচন দেখতে পাব কি না। যেখানে দেশের জনগণ ভোটদানের মাধ্যমে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে এটি সেই আন্দোলন।
তার মানে কি এই যে, প্রশ্নটা শুধু ইশরাকের শপথ কিংবা তার মেয়াদকাল নয়, বরং জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বিএনপির যে টানাপোড়েন—তারই বহিঃপ্রকাশ? যদি তাই হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচনের ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে গত ১৩ জুন লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পরে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগে শর্তসাপেক্ষে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে যে ঐকমত্য হয়েছে, তারপরেও কেন ইশরাক ও তার সমর্থকরা আন্দোলন করছেন?
ইশরাক কী করতে পারেন?
আইনত ইশরাককে শপথ পড়িয়ে মেয়রের চেয়ারে বসানো কঠিন। সেক্ষেত্রে ইশরাক বরং এখন দ্রুত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের দাবি জানাতে পারেন। কেননা সংবিধানের ৫৯ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক এককাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হইবে।’
তার মানে স্থানীয় সরকারপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হবে। এখানে কোনো অনির্বাচিত প্রশাসক বসানো অসাংবিধানিক। স্থানীয় সরকার আইনে প্রশাসক বসানোর বিধান থাকলেও সেটি সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইশরাক বরং এই যুক্তিতে দ্রুত ঢাকা দক্ষিণের নির্বাচন দাবি করতে পারেন এবং যেহেতু ঢাকার এই অংশে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা এবং তরুণ নেতা হিসেবে দলমত নির্বিশেষে রাজনীতিতে তার একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে; উপরন্তু তার প্রয়াত পিতার প্রতিও ঢাকাবাসীর একটি বিশেষ শ্রদ্ধা ও সমীহ রয়েছে, অতএব একটি অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে এখানে ইশরাককে হারানো যেকোনো প্রার্থীর জন্যই কঠিন হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
সুতরাং, ২০২০ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত করপোরেশনের মেয়াদ যেহেতু এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে এবং আপাতদৃষ্টিতে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, সরকার তাকে শপথ পড়াবে না, অতএব তার উচিত হবে এখন দ্রুত এখানে সিটি করপোরেশন নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা। সেইসঙ্গে দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোয়ও দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। জাতীয় নির্বাচন কবে হবে আর তারপরে কবে স্থানীয় নির্বাচন হবে, সেই আশায় থাকলে স্থানীয় সরকারপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সেবা নিতে গিয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়তে থাকবে।
অবশ্য এখানে একটা ভিন্ন রাজনীতিও আছে। সেটি হলো, সব দলীয় সরকারই চায়, স্থানীয় নির্বাচনগুলো তাদের অধীনে হোক—যাতে তাদের দলীয় লোক এবং স্থানীয় এমপিদের আত্মীয়-স্বজনরা জয়ী হয়ে আসতে পারেন। তাতে করে নির্দলীয় ভালো মানুষেরা ছিটকে পড়েন। অতএব, আগামী ফেব্রুয়ারিতে যদি জাতীয় সংসদ নিবাচন হয়ও, তারপরও এর আগে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তত সিটি করপোরেশনগুলোয় নির্বাচন দিয়ে সেগুলো প্রশাসকমুক্ত করা জরুরি।