Published : 25 Jan 2025, 07:39 PM
কর্তৃত্ব আর শোষণের বিরুদ্ধে কেবল মানুষ নয়, বন্যপ্রাণীরাও বিদ্রোহ করে। জীবনকে রুদ্ধ করে খাঁচায় আটকে রাখা যায় না। জীবন মুক্তি চায়। শেকল আর গরাদ চুরমার করতে চায়। হাতিখেদা, হুল, উলগুলান, তেভাগা, টংক, নানকা, ভাষাসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ থেকে জুলাই অভ্যুত্থান আমরা মানুষের বিদ্রোহী সব রক্তআখ্যান দেখেছি।
কিন্তু স্যাপিয়েন্স মানুষদের বিশ্বাস করে না পৃথিবী। কারণ মানুষ খাঁচা, খুপড়ি আর গরাদ বানায়। জঙ্গল থেকে ছানাদের ধরে এনে চিড়িয়াখানায় আটকে রাখে। পরিবার থেকে মা-বাবাকে ধরে লোহার খাঁচায় বন্দি করে। বন্দি প্রাণীদের দেখে মানুষ ‘বিনোদন’ করে। কারোর বন্দিত্ব নিয়ে এ কেমন বিনোদন? বন্দি বন্যপ্রাণীরা মুক্তি চায়। সন্তান ও পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরতে চায়।
বন্যপ্রাণীকে আটকে রেখে, খাঁচায় বন্দি করে, চিড়িয়াখানা বানিয়ে প্রদর্শন, বাণিজ্য ও বিনোদন নিয়ে নানামুখি তর্ক আছে। পরিবেশগত নীতিনৈতিকতার প্রশ্ন আছে। প্রাণীর সঙ্গে মানুষের আচরণজনিত বিষয়গুলো নিয়ে একাডেমিক ডিসেকোর্সে বহু আলাপ আছে। কিন্তু ন্যারেটিভ বদলাচ্ছে না। বন্যপ্রাণীরা বন্দিই থেকে যাচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রবল কর্তৃত্ব আর ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থেকে মুক্তি চেয়েছে।
কেবল কী মানুষের মুক্তি? তাহলে কী জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট কেবল এথনোপ্রোসেন্ট্রিক? নিঃসন্দেহে না। আমরা বহু গ্রাফিতি দেখেছি, যেখানে কেবল মানুষ নয়, কুকুর-বিড়াল-গাছপালা ও প্রাণীদের অধিকারের দাবি আছে। গরাদ ভাঙার আওয়াজ কেবল মানুষ নয়, বন্যপ্রাণীরাও তুলেছে লাগাতার। কিন্তু মানুষের সমাজ, মানুষের ব্যবস্থা এই মুক্তির দাবিকে সর্বদা আড়াল করতে চায়। বন্যপ্রাণীর সঙ্গে মনুষ্য প্রজাতির এই অমীমাংসিত আচরণ গর্হিত অপরাধ। কিন্তু এর কোনো বিচার নেই। জুলাই অভ্যুত্থান সবার মুক্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়েছে। কর্তৃত্ব আর বন্দিত্বের গরাদ ভেঙেছে। মুক্তির এই আওয়াজ মানুষের ময়দান ছাড়িয়ে বন্যপ্রাণীর সীমানাতেও আসছে।
গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে একটি নীলগাই জানবাজি রেখে মুক্ত হয়েছে সম্প্রতি। গণমাধ্যকে বিদ্রোহী নীলগাইয়ের এই মুক্তিকে ‘পালানো’ হিসেবে লিখেছে। সাফারি পার্কের কর্মকর্তারা মুক্ত নীলগাইটিকে আবারো বন্দি করার জন্য আপ্রাণ ‘অভিযান’ চালাচ্ছেন। নীলগাইটি কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বা বিচারাধীন অপরাধী ছিল নয়। তাহলে তাকে আবার বন্দি করতে হবে কেন? কেন একটি নীলগাই সাফারি পার্কের গরাদ থেকে মুক্তি পেতে চায় এর উত্তর খোঁজা জরুরি।
বন্যপ্রাণীর কাছে সাফারি পার্ক মূলত ‘সাফারিং পার্ক’, যন্ত্রণাময় বন্দি জীবন। বিদ্রোহী নীলগাইটি আমাদের কী বার্তা দিতে চেয়েছে তা বোঝা জরুরি। এই বার্তা পাঠ করতে না পারলে জুলাই অভ্যুত্থানের দায় ও দরদের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত অসম্পূর্ণ থাকবে। নিরাপদে নীলগাইটিকে তার উপযোগী বাস্তুতন্ত্রে ফিরিয়ে দেয়া দরকার।
নীলগাইয়ের এই বিদ্রোহ প্রথম কোনো ঘটনা নয়। করোনা মহামারীর সময় ২০২১ সালেও আরেকটি নীলগাই বিদ্রোহ করেছিল। একই পার্ক থেকে একটি নীলগাই পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছিল। তখন দুই মাস ধরে এটি দেশের কয়েকটি জেলায় বিচরণ করে শেষ পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর বনে পৌঁছে গিয়েছিল। বন থেকে উদ্ধার করে নীলগাইটি পার্কে ফিরিয়ে আনা হয়। দেশে নানা সময়ে ধরা পড়া নীলগাই আটক করে সাফারি পার্কে আনা হয়। বর্তমানে ১১টি নীলগাই ছিল বলে কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে তথ্য দিয়েছেন। সাম্প্রতিক নীলগাই বিদ্রোহের ঘটনাটি ব্যাখা করতে গিয়ে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বলছিলেনন, ‘প্রজনন মওসুম চলায় এক মাদী নীলগাইয়ের সঙ্গে একাধিক পুরুষ নীলগাই প্রজননে লিপ্ত হতে যায় এবং নিজেদের ভেতর সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর একটি নীলগাই জরাজীর্ণ দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়।’
‘সাফারিং’ পার্কের যন্ত্রণা এবং কেন একটি নীলগাইকে বিদ্রোহী হতে হয় তা বোঝার জন্য সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের এই বয়ানটুকুই যথেষ্ট। ‘সাফারিং’ পার্কে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ এবং অবাধ বিচরণ অঞ্চল এবং প্রাকৃতিক খাদ্য উৎস নেই। এখানে কোনো প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র এবং বাস্তুসংস্থানিক সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি। প্রাণীদের প্রজনন অধিকারের জন্য সঙ্গী-সাথী নেই। কারো ইচ্ছা হয়েছে তাই এখানে ক্যাংগারু আনা হয়েছে, জিরাফ, জেব্রা যেসব প্রাণীরা কোনোভাবেই শালবনে বাঁচতে পারে না। জোর করে বন্যপ্রাণীদের আটকে টিকেট দিয়ে প্রদর্শন করবার এই ধরণের প্রবণতা কী খারিজ হবে না? বিদ্রোহী নীলগাই আমাদের এই বার্তাটিই দিয়েছে।
ভাওয়াল গড়ের রাথুরা শালবন এক প্রাচীন পাতাঝরা বন। এখানে দেয়ালবন্দি করে ভিনদেশি ও ভিন্ন বাস্তুতন্ত্রের বন্যপ্রাণীদের আটকে রাখার কোনো মানেই হয় না। বরং এই পাতাঝরা বনকে একটু রেহাই দিলে এই বন তার নিজের শক্তিতে আবার বিকশিত হয়ে শালবনের উপযোগী বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাস ও বিচরণ অঞ্চল হয়ে উঠতে পারত। একটি শালবনে গিয়ে বন্দি জেব্রা দেখার বদ খাসলত কারো থাকার কথা নয়। এমনকি ‘সাফারিং’ পার্কের ভেতর একটি ‘টাইগার রেস্টুরেন্ট’ আছে। বিজ্ঞাপন দেয়া হয়, খাবার খেতে খেতে বাঘ দেখুন। এইটা কোন ধরণের কনজিউমারিজম? বরং শালবনে যদি কখনো মিলে যায় চামড়াঝোলা ব্যাঙ কী বনরুই, উঁই ঢিবি বা সজারু কিংবা মেছোবিড়াল বা বানর তা হয়তো আমাদের শিশুদের বন ও বন্যপ্রাণীর প্রতি মনোযোগী ও দায়িত্বশীল করে তুলবে। গবেষণা এবং সৃজনশীল তৎপরতা বাড়বে।
বন ও বন্যপ্রাণীর মাধ্যমে পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক অবদান বেগবান হবে। রাষ্ট্রকে আহবান জানাব, বিদ্রোহী নীলগাইয়ের যন্ত্রণা ও মনস্তত্ত্ব পাঠ করবার এবং সকল বন্যপ্রাণীর স্বাধীন বিচরণভূমি নিশ্চিত করবার।
কক্সবাজার ও গাজীপুরে দুটি সাফারি পার্ক হয়েছে। দুটি পার্কই ‘সাফারিং’ পার্কে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা, অবহেলা, গবেষণাহীনতা, কর্তৃত্ব, বাণিজ্য নানাকিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। একের পর এক বন্যপ্রাণীর নিদারুণ মৃত্যু ঘটেছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। প্রাণীদের হত্যার অভিযোগও ওঠেছিল। ২০১১ সালে যখন রাথুরা শালবনে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১১ সালের ৩ মার্চ অধিগ্রহণ নোটিশ পাওয়া হাজার হাজার মানুষ গাজীপুরের শ্রীপুরের পিরুজালী-বাবুরচালাতে সমাবেশ করেছিলেন। সেই সমাবেশ থেকে আমরা শালবনের প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষার কথা বলেছিলাম। সাফারি পার্কের নামে গড়া ‘সাফারিং’ পার্কে বিদেশ থেকে প্রাণীদের না আনার আহবান জানিয়েছিলাম। কিন্তু রাষ্ট্র আমাদের কথা শুনেনি। সাফারি পার্কের ক্ষেত্রে বাস্তুতন্ত্র উপযোগী প্রাণী-প্রজাতি নির্বাচন, সংবেদনশীলতা, ব্যবস্থাপনা এবং প্রাণীদের বিচরণস্থল এবং পরিবেশের সঙ্গে গড়ে ওঠা সম্পর্ক একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দুই ধাপে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মোট ২৫টি জেব্রা আনা হয়। ২০১৫ সালেই ১১টি জেব্রার মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালে এখানে জন্ম হয় প্রথম জেব্রা শাবকের এবং ২০২১ পর্যন্ত মোট ২৫টি জেব্রা শাবক জন্মায়। ২০২১ পর্যন্ত নানা কারণে আরও ১০টি জেব্রা মারা যায়, ২০২২ সালের ২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১১টি জেব্রার মৃত্যু হয়। সাফারি পার্ক চালুর পর জেব্রা মারা গেছে ৩২টি। ২০১৭ সালের ১৭ মে অজ্ঞাত রোগে দুটি জিরাফ মারা যায় এবং ২০১৭ সালে একটি পুরুষ জিরাফ মারা যায়। এখন পর্যন্ত পার্কে দুটি সিংহ মারা গেছে। পার্কে বেশ কয়েকটি ক্যাঙ্গারু আনা হলেও এদেরও ধারাবাহিক মৃত্যু ঘটেছে । ২০২২ সালে একটি বাঘ মারা গেলে পার্ক কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, অ্যানথ্রাক্সে মারা গেছে। এর আগে আরো একটি বাঘ মারা গেলে বলেছিলেন, গলায় গুইসাপ আটকে বাঘ মারা গেছে। ‘সাফারিং’ পার্কে জেব্রা যেখানে বসবাস করছে সেখানে রয়েছে বিশাল শালবন, জেব্রার খাবারের অনুপযোগী উদ্ভিদ ও লতাপাতা রয়েছে এখানে, আছে বদ্ধ নালা, সেখানে পানি জমে থাকে, জেব্রার বসবাসের জন্য অনুপযুক্ত এই এলাকা।
সাফারি পার্ক কেন করা হয়েছিল? রাষ্ট্র তখন কি বলেছিল? সাফারি পার্ক প্রকল্প শুরুর দিকে গাজীপুর তৎকালীন জেলা প্রশাসক সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, মূলত নাগরিক ক্লান্তি থেকে মুক্ত হতে বিনোদনের জন্য এ পার্কটি করা হচ্ছে। করপোরেট দখল থেকে প্রাচীন এই শালবন বাঁচাতে সাফারি পার্ক এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হলেও শুরু থেকেই স্থানীয় প্রাণপ্রজাতি ও বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষায় এই প্রকল্প গুরুত্ব দেয়নি। বন থেকে ডাকাতি করা বন্যপ্রাণী কালেভদ্রে ধরা পড়ার পর তাদের গন্তব্য হয় এইসব পার্ক। বন্যপ্রাণী ডাকাতদের বিচার ও শাস্তি হতে আমরা খুব একটা দেখি না, বরং ধরা পরার পর বন্যপ্রাণীদের সাফারি পার্কে হাজত বাস হয়। মানুষ দেখে, বন কর্মকর্তার বাসা থেকে উদ্ধার করা তিন বাঘের ছানাকে। ‘সাফারিং’য়ের শিকার বন্যপ্রাণীদের খুব কমই বিদ্রোহ করতে পারে। প্রাণীরা আবদ্ধ অবস্থায় শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, স্তব্ধ, ক্লান্ত ও বিমর্ষ থাকে।
কিন্তু নীলগাইটি বিদ্রোহ করতে পেরেছে। গরাদ ভেঙে মুক্ত হওয়ার সাহস করেছে। সাফারি পার্ক, চিড়িয়াখানা কিংবা কাঁটাবনের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা। জুলাই অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের আওয়াজ ও তৎপরতা জারি আছে। দেশের বন্যপ্রাণীদের গলায় শেকল ও যন্ত্রণার দাগ রেখে কীভাবে রাষ্ট্রের সংস্কার সম্ভব? প্রতিদিন হাতি হত্যা কিংবা হাতি নির্যাতনের খবর আসে। হাতি কেউ পয়দা করেনি। কোনো বহুজাতিক কোম্পানি হাতি বানিয়ে প্যাকেটে বিক্রিও করেনি। শুধু হাতি নয়, বন্যপ্রাণী মাত্র বন থেকেই ধরা হয় এবং এরপর টাকা কামাতে নির্মমভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।
কাঁটাবনে দেদার বন্যপ্রাণী ও পাখি বিক্রি হয়। বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ সাইটেস বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছিল, কিন্তু দেশে বন্যপ্রাণীর অবাধ বাণিজ্য থাকায় সাইটেস থেকে বাংলাদেশকে বিরত রাখা হয়েছে। হাকালুকি হাওর কিংবা লাউয়াছড়া, সুন্দরবন কিংবা সিংড়া প্রতিটি প্রাকৃতিক অঞ্চল আজ নানাভাবে বন্যপ্রাণীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং অনিরাপদ। স্যোশাল মিডিয়ায় অনবরত বন্যপ্রাণী খুন করে কিংবা পাখির লাশের বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। কিছু হলেই ডিজিটাল আইনে মামলা হলেও, এমন ভয়াবহ অপরাধ প্রচার করলেও কারো বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়নি। আর এসব ঘটনা বন্যপ্রাণীর প্রতি আমাদের চিন্তা ও মূল্যবোধকে একটা নিওলিবারেল ক্ষমতার রোবট বানিয়ে ফেলে। আমরা ভাবি এবং পছন্দ করি বন্যপ্রাণীকে আটক করে কুৎসিত বিনোদন ও আনন্দ উপভোগের। আর এভাবে বন্যপ্রাণীর বন্দিত্ব প্রশ্নে আমরা বহুজন এক একটা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফ্যাসিবাদ হয়ে প্রতিষ্ঠিত থাকি। আর গোটা দেশটাকে মনে করি এক লম্বা ‘কাঁটাবন’।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর ২৪নং ধারায় উল্লেখিত আছে, “সরকার বন্যপ্রাণী সম্পদ তাহার নিজ আবাস্থলে (ইন-সিটু) বা আবাসস্থলের বাহিরে অন্যত্র (এক্স-সিটু) সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এবং জনসাধারণের গবেষণা, চিত্তবিনোদন এবং শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে যে কোন সরকারি বনভূমিকে বিজ্ঞপ্তি জারীর মাধ্যমে সাফারী পার্ক, ইকোপার্ক, বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র বা উদ্ভিদ উদ্যান ঘোষণা করিতে পারিবেন।”
গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে গঠিত সরকার জনআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করবে। কর্তৃত্ববাদী রেজিমের কোনো প্রকল্প, কর্তৃত্ব কিংবা মতাদর্শ কী? রাষ্ট্র লাঠিটিলা সাফারি পার্ক প্রকল্প বাতিল করতে পেরেছে। বিদ্রোহী নীলগাইয়ের বার্তা রাষ্ট্রকে বুঝতে হবে। সাফারি পার্ক, চিড়িয়াখানা, বন্যপ্রাণীর বন্দিত্ব, বন্যপ্রাণী আটক করে বাণিজ্যিক প্রদর্শন এসব নিয়ে রাষ্ট্রকে প্রাণবিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জন তর্ক, মতামত এবং বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা ও অধিকার বিবেচনায় সকল গরাদ ও খাঁচার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র দাঁড়াবে আশা রাখি। ‘সাফারিং’ পার্কের নিপীড়নকে প্রশ্ন করে মুক্ত হওয়া নীলগাইটিকে স্যালুট ও অভিনন্দন। এই সাহস জাগ্রত থাকুক মানবিক ও প্রাণবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে।