Published : 02 Jun 2025, 09:14 PM
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনায় আসা প্রায় অধিকাংশ দলের ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের আয়োজনের প্রস্তাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেছেন, “এখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সেটি বিবেচনা করবেন সেটা আমরা আশা করি। আমরা মনে করি তিনি জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে নিরপেক্ষভাবে সেই ভূমিকা পালন করবেন। কারও প্রতি রাগ-বিরাগ প্রদর্শন করবেন না। জাতি তার কাছ থেকে চূড়ান্ত নিরপেক্ষতা আশা করে, আমরাও আশা করি।”
সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা মনে করি, ডিসেম্বরের ভেতরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা খুবই সম্ভব। এর আগে জরুরি ভিত্তিতে যে সমস্ত সংস্কার করা প্রয়োজন বিশেষ করে নির্বাচনমুখী, সেইগুলো চিহ্নিত করে আমরা ঐকমত্যের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করি।”
সোমবার বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরুর সভায় যোগ দেওয়ার পর সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে সংলাপে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল।
‘সংস্কার এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এমন কোনো সংস্কার নাই যেগুলো একমাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে আজকে রিপোর্ট পেয়েছি, আইন মন্ত্রণালয়ের অনেকগুলো অর্ডিন্যান্স এবং অনেকগুলো সংশোধনী এসেছে বিভিন্ন সেক্টরে, যেগুলো অলরেডি বাস্তবায়ন হয়েছে। অনেকগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, সেগুলো অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে করা সম্ভব, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সম্ভব এবং কিছু কিছু সংস্কার অফিস আদেশের মাধ্যমে সম্ভব।
“বিশেষ করে সংবিধান সংশোধনী ব্যতিরেকে অন্য সকল সংশোধনী যেগুলো একমত হবে সংস্কার প্রস্তাব, সেগুলো অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে, অফিস আদেশের মাধ্যমে একমাসের ভেতরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেটা আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি। সুতরাং নির্বাচন ডিসেম্বরের বাইরে যাওয়ার একটিও কারণ উল্লেখ করার মত নেই। এই বিষয়টা আমরা বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।”
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “সংবিধান সংক্রান্ত যে সমস্ত প্রস্তাব বিভিন্ন দল দিয়েছে, সেগুলো আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেটা তো আগামী এক মাসের ভেতরে উনারা যেভাবে আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন, তাতে একটা ঐকমত্যে আসা সম্ভব, সনদে আসা সম্ভব।
“কিছু কিছু বিষয়ে অবশ্যই দ্বিমত থাকবে, সব দল যেসব বিষয়ে একমত হবে এমন আমরা আশাও করি না। তবে যেগুলোতে আমরা ঐক্যমত্যে আসতে পারব, সেই বিষয়গুলো অবশ্যই জাতীয় সংসদে সংশোধনী হবে। তার আগে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদ স্বাক্ষরিত হলেই যথেষ্ট। সেটা আমাদের ইলেকশন মেনিফেস্টোতেও আসবে এবং জাতির কাছে একটা অঙ্গীকার হিসেবে থাকবে।”
ঐকমত্য কমিশনের প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমার কাছে মনে হয়ে উনারা যথেষ্ট আন্তরিক। তবে উনারা যথেষ্ট সময়ক্ষেপণ করেছেন। আমরা আশা করি, আর বেশি সময় নেবেন না। এই মাসের মধ্যে সবকিছু কম্পাইল করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।”
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক মঙ্গলবার
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার শুরুতে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করবে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দলটির সঙ্গে বৈঠকের সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেদিনও বিএনপি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সালাহউদ্দিন আহমদ।