Published : 07 May 2025, 09:05 PM
দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে শুরু করে সকল নিম্ন আদালতে আলাদা শরিয়াহ আদালত স্থাপনের কথা বলেছে ইসলামী আন্দোলন।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, “দেশের সকল পর্যায়ে আরেকটা মৌলিক প্রস্তাবের মধ্যে আমরা বলেছি, আলাদা শরিয়াহ আদালত স্থাপন করতে হবে। বর্তমানেও আদালতে বিভিন্ন শরিয়াহর আলোকে বিচার ফয়সালা হয়, কিছু কিছু বিষয়ে- যেমন মুসলমানদের বিবাহ, তালাক, উত্তরাধিকার ও মিরাজ সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে।
“কিন্তু আমরা বলছি, শরিয়াহ মোতাবেক শরিয়াহর উপর আস্থা রেখে যদি উভয়পক্ষ বিচার ফয়সালা চায়, সেই ক্ষেত্রে সুযোগটা থাকতে হবে- সর্বোচ্চ আদালত থেকে সর্বনিম্ন আদালত পর্যন্ত। আদালতের সকল স্তরে আলাদা শরিয়াহ আদালত থাকতে হবে এবং সেখানে যারা ইসলামি স্কলার নিয়োগ দিতে হবে। শরিয়াহ আইনে বিচার খুব দ্রুত ফয়সালা হয়। এ জন্য আমরা আলাদা শরিয়াহ আদালত চেয়েছি।”
ধর্ম ও আল্লাহ-রসুলকে নিয়ে অবমাননাকর কথা বলা বন্ধে আলাদা আইন করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বলে জানান আতাউর রহমান।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা বলে দিয়েছি প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করার আগে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা যাবে না। যেন তেন ন্যূনতম সংস্কার নয়।
“সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার পর যে নির্বাচনকালীন সরকার হবে, সেই সরকার জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করবে। পরে জাতীয় নির্বাচন করবে।”
আতাউর রহমান বলেন, “১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে অধিকাংশ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, বেশকিছু জায়গায় দ্বিমতও আছে। সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদ রাখার প্রস্তাব করেছে, আমরা বলেছি বহুত্ববাদ রাখা যাবে না, পরিবর্তে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, যেটা আগে ছিল এটা পুনঃস্থাপন করতে হবে।
“নিরপেক্ষ নির্বাচনে ব্যর্থ হলে এখন যেটা আছে, জবাবদিহিতার কোনো পদ্ধতি নাই। নির্বাচন কমিশন যদি সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদেরকে জবাবদিহিতায় আনতে হবে।”
বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে কার্যকরভাবে স্বাধীন রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় থাকবে, সেখান থেকে বিচার বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা হবে।
“এখন জেলা প্রশাসকের কাছে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আছে, নতুন প্রস্তাবে উনারা রেখেছে। আমরা বলেছি, যেহেতু বিচার বিভাগ আলাদা এখানে জেলা প্রশাসকের কাছে আলাদা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, যেহেতু জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব জেলাতেই আছে। কারণ জেলা প্রশাসক অনেক পাওয়ার এক্সারসাইজ করেন। আমরা বলেছি এটা বিচার বিভাগের হাতেই থাকা উচিত।”
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে ঐকমত্য কমিশন।
পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চেয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এরপর সেই মতামত ধরে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে সংলাপ করছে কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার।