Published : 19 Jun 2025, 12:56 PM
টানা তৃতীয় দিনের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির ‘দোয়েল মাল্টিপাস হলে’ এই বৈঠক বসেছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া কেমন হবে এদিন তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। কমিশনের সদস্যদের মধ্যে আছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন।
৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে আছেন। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক রোরহান উদ্দিন খান; জামায়াতে ইসলামীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ; এনসিপির হাসনাত আবদুল্লাহ; গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস; খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের; বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক; বাংলাদেশ জাসদের মুশতাক হোসেন, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের বজলুর রশীদ, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের হাতে সময় এত স্বল্প, খুবই স্বল্প সময়। জুলাই মাসের মধ্যেই এটার একটা চূড়ান্ত পরিণতি জাতীয় সনদ তৈরি করতে হবে।”
এজন্য রাজনৈতিক দলগুলো সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, “আমরা গতকালের অমীমাংসিত বিষয় থেকে আলোচনাটা শুরু করব সেটা হচ্ছে রাষ্ট্রপতির নির্বাচন প্রক্রিয়া। এটা নিয়ে গতকাল আমরা কথা বলেছি… সেখানে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার বিষয়টি এসেছে। সেখান থেকে আমরা আলোচনা শুরু করব।”
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিনের প্রতিবেদন জমা পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়।
এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন করে ঐকমত্য কমিশন।
আলোচনার সুবিধার্থে কয়েকটি দলের সঙ্গে একাধিক দিনও বৈঠক চলে। আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য ও আংশিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়।
কোরবানির ঈদের আগে প্রথম ধাপের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য ২ জুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসেছিল ঐকমত্য কমিশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
আর ঈদের ছুটির পর গত মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিন ধরে চলছে দ্বিতীয় পর্বের এই আলোচনা।
আগামী সাপ্তাহে রোববার থেকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে আলী রীয়াজ জানিয়েছেন।