Published : 16 Jun 2025, 02:58 PM
লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের যে বৈঠক হয়েছে, তা ‘ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই; বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।
তিনি বলেছেন, “আমার বিশ্বাস দেশে নির্বাচন আবহ তৈরি হয়েছে। যে সুন্দর একটা বৈঠক হয়েছে তা আমাদের মাঝে স্বস্তি এনে দিয়েছে। একটা উৎসবমুখর নির্বাচনের দিকে আমরা সবাই এগিয়ে যাই।”
১২ বছর আগে রাজধানীর সূত্রাপুর থানার এক বিস্ফোরক মামলায় এ্যানীসহ নয়জনের খালাসের রায় হয় সোমবার। রায়ের পর ঢাকার স্থানীয় আদালতে কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির (সিআরইউ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন এই বিএনপি নেতা।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ্যানী বলেন, “তারেক রহমান দেশে থাকলে, দেশেই আলোচনা হতো। একটা বড় দল, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দল হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে তো সবার আগেই কথা বলার দরকার ছিল। কিন্তু উনি (তারেক রহমান) কী কারণে, কোন প্রেক্ষাপটে দেশের বাইরে এটা তো অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বুঝতে হবে।
“সুতরাং প্রধান উপদেষ্টা বিদেশে গিয়েছেন। সেই সুযোগে তারেক রহমানের সাথে একটা বৈঠক হয়েছে, এটাকে ভিন্নখাতে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করতে হবে। সবাই মিলে লড়েছি, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। সবাই মিলে একটা বৈঠক, আলাদা বৈঠক একই উদ্দেশ্য। সুতরাং এখানে দ্বিমত করার সুযোগ আছে বলে আমি দেখি না।”
যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে গত শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকের পর এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালে রোজা শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছিল। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এপ্রিলের কথা বলেছিলেন।
এই টানাপড়েনের মধ্যে লন্ডনের বৈঠকে দুই পক্ষ মাঝামাঝি একটি অবস্থানে আসায় বিএনপি স্বস্তি প্রকাশ করেছে।
তবে জামায়াতে ইসলামী এর তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর ‘যৌথ বিবৃতি’ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে’ ।
আর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, বিদেশের মাটিতে নির্বাচন নিয়ে ব্ঠৈক করে ‘দেশকে পেছনের দিকে’ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সমালোচনার জবাবে এ্যানী বলেন, “সবার প্রতি অনুরোধ, সামনে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ আমাদের তৈরি করতে হবে। যেখান থেকে জাতি দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা জাতির মুক্তি।”
এই বিএনপি নেতা বলেন, “৫ অগাস্টের পর আমরা আশা করেছিলাম, আমাদের আন্দোলনের ফসল এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে, একটা কমিশন হবে। সারাদেশের মিথ্যা, সাজানো মামলাগুলো খুব দ্রুত নিষ্পত্তি হবে, শেষ হবে। এখন পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে আমার মামলাগুলি যেহেতু প্রত্যাহার হয়নি, অনেকের মামলাও প্রত্যাহার হয়নি। এটা একটা কষ্টের জায়গা।
“আশা করব, এ সরকারের কাছে প্রত্যাশার জায়গা থেকে, সারাদেশে অনেক নেতাকর্মী আছে। এরা শুধু বিএনপি না, এরা অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। মুভমেন্টে ছিল। এরা ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে লড়াই, সংগ্রাম করেছে। এখনো অনেকে জেলে আছে। দ্রুত এদের মুক্তির ব্যবস্থা করবেন। মামলা প্রত্যাহারের জন্য কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।”
কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মামুন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, এ্যানীর আইনজীবী মহি উদ্দিন চৌধুরী, আইনজীবী মো. তানজিম চৌধুরী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
পুরনো খবর
বিদেশের মাটিতে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত অভ্যুত্থানের সঙ্গে ‘প্রতারণা’: এনসিপির নাসির