Published : 20 Nov 2024, 12:30 PM
চাঁদাবাজি, জমি-পুকুর দখল ও মাছ লুটের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রাজশাহীর বাগমারায় সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার যাত্রাগাছি বাজারে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান দখল হওয়া জমি ও পুকুরের ইজারাদার বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা।
তিনি অভিযোগ করেন, ১৫ লাখ টাকা ‘চাঁদা না পেয়ে’ বাগমারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামাল হোসেন ও গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুনসুর রহমান তাদের ব্যক্তি মালিকানা পুকুর দখল করে নিয়েছেন। এক কাজে তারা আওয়ামী লীগের তৈরি জালাল উদ্দিনের ‘হেলমেট বাহিনী’কে ব্যবহার করেছেন। যারা ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার মিছিল হামলা করেছিল।
এই ‘হেলমেট বাহিনী’ দিয়ে বিএনপি নেতা মুনসুর রহমান গত ৭ ও ২১ অগাস্ট দুই দফায় পুকুরের কয়েক লাখ টাকার মাছ লুট করেন। এছাড়া গত ১৫ নভেম্বর রাতে পুকুরে বিষ দিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা মাছ মেরে ফেরেন। এ সময় পুকুরের কেয়ারটেকার রায়হানের বাড়িতেও হামলা-ভাঙচুর করেন তারা।
গোলাম মোস্তফা বলেন, “কিন্তু এসব ঘটনায় বিএনপি নেতা কামাল হোসেনের ‘চাপে’ পুলিশ কোন মামলা নেয়নি। ফলে তাদের হুমকি-ধামকিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। কেয়ারটেকার রায়হানের পরিবারও বাড়ি ছাড়া।”
সংবাদ সম্মেলনে জমির মালিক ও মারিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, রাজশাহী জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি শাহজামাল, তারেক রহমান প্রজন্ম দলের মাড়িয়া ইউনিয়ন শাখার সভপতি জিয়াউর রহমান এবং জমি-পুকুরের আরেক ইজারাদার ও গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান মিল্টন উপস্থিত ছিলেন।
চাঁদাবাজি, দখল ও লুটের ঘটনায় জড়িত বিএনপি নেতাদের দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে জমির মালিক খলিলুর রহমান বলেন, “এতো বড় অন্যায় মেনে নেওয়ার মত নয়। বিষয়টি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
অভিযোগের বিষয়ে মুনসুর রহমান বলেন, “২০১৪ সালে এই জমি ও পুকুর আমি লিজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম। গত ৫ অগাস্টের পর একজন জমির মালিক আমাকে লিজ দিতে চেয়েছিল। তার কথামত আমি পুকুরে কিছু মাছ ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি আর আসেননি এবং আমাকে লিখে দেয়নি।”
তবে মাছ লুট ও বিষ দিয়ে মাছ নিধনের বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতা কামাল হোসেনও।
তিনি বলেন, “আন্ধিয়ার বাগানের জমির মালিকরাও বিএনপির; যারা ইজারা নিয়েছে তারাও বিএনপির। আবার যারা দখল করছে তারাও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি মিমাংসার জন্য আমি চেষ্টা করছি। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে দুই দফায় বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু কেউ মানতে চাইছে না।”