Published : 12 Jun 2025, 04:50 PM
গোপালগঞ্জে টোল বিহীন সেতুতে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীর এক সদস্যকে মারধরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
বুধবার রাতে আহত সেনা সদস্যর বাবা বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান।
এর আগে বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চাপাইল সেতু এলাকায় মারধর করা হয় সেনাবাহিনীর কর্পোরাল মো. সাজ্জাদ আহম্মেদকে (৩০)।
ঢাকায় সেনাসদরে কর্মরত সাজ্জাদ নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার নড়াগাতী গ্রামের মো. মনিরুজ্জামানের ছেলে।
মামলার আসামিরা হলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ফকিরকান্দি গ্রামের এসএম মাহামুদ (৩৫), পুরাতন মানিকদাহ গ্রামের সাগর বিশ্বাস (২৬), সাগরের ভাই টুটুল বিশ্বাস (৩১), জসিম বিশ্বাস (৪০), সৌরভ বিশ্বাস (১৮), মানিকদাহ গ্রামের কালু (২৪), ইমন সিকদার (১৮), সাহিন ভূইয়া (২১), কাজীর বাজার এলাকার আলআমিন (৩০), চর সোনাকুড় গ্রামের শিমুল সিকদার (২৭) ও নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার চাপাইল গ্রামের আনোয়ার শেখ (৬৫)।
আসামিদের মধ্যে পাঁচজনকে যৌথবাহিনী বুধবারই ঘটনাস্থলসহ গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
আহত কর্পোরাল সাজ্জাদ আহম্মেদ বলেন, “আমি গ্রামে পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ উদযাপন করি। ঈদের ছুটি শেষে একটি পিকআপে সংসারের আসবাবপত্র নিয়ে বুধবার দুপুরে কর্মস্থল ঢাকা সেনা হেডকোয়ার্টারের উদ্দেশ্যে রওনা দেই।“
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের পিকআপ চাপাইল সেতু পার হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “সেতুর গোপালগঞ্জ পাড়ে আসলে সাগর, জসিমসহ ৭-৮ জন সেতু পারাপারের টোল হিসেবে চাঁদা দাবি করে। কিন্তু টোলবিহীন এ সেতুতে আমি টোল বা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করি। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বাক বিতণ্ডা হয়।
“আমি সেনাসদস্য পরিচয় দিলে তারা আমার উপর আরও ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে তারা আমার গায়ে হাত তোলে। পরে গাড়ি থেকে নামিয়ে লাঠিসোটা দিয়ে মারপিট করে।”
মারধরে তার কপাল কেটে গেছে জানিয়ে এই সেনাসদস্য বলেন, “সেখানে তিনটি সেলাই লেগেছে। পরে আমি গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ঢাকা হেডকোয়ার্টারে চলে এসেছি। এখন সিএমএইচ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছি।”
চাপাইল গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল হক মল্লিক বলেন, “চাপাইল সেতুটি চালুর পর থেকেই টোল ফ্রি রয়েছে। কিন্তু ইজিবাইক চালক, সেতু এলাকার দোকানদারসহ একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করছে।
“এনিয়ে মাঝে মধ্যেই চাঁদা আদায়কারীরা যানবাহনে হামলা ও মারপিটের ঘটনা ঘটাচ্ছে। অধিকাংশ যানবাহনের চালক বা যাত্রী ভয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।”
দ্রুত এ চক্রকে চিহ্নিত করে চাদা আদায় বন্ধ করার দাবি করেন তিনি।
গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন চাপাইল সেতু দিয়ে প্রতিদিন গোপালগঞ্জ, নড়াইল, বাগেরহাট ও খুলনা জেলার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সেতুটি টোল ফ্রি।
“এখানে টোল আদায়ের কোনো ব্যবস্থা নেই কিংবা আমরা এখানে টোল আদায়ের জন্য কোনো ঠিকাদারও নিয়োগ করিনি। তাই এই সেতুতে কোনো প্রকার টোল আদায়ের সুযোগ নেই।”
ওসি সাজেদুর রহমান বলেন, বুধবার আটক পাঁচ জনকে এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এজাহার নামীয় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। তাদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।”
পুরানো খবর