Published : 07 Jun 2024, 11:43 PM
নির্যাতনের অভিযোগ এনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার রাতে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করা হয় বলে শুক্রবার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানান।
মামলায় নির্যাতনের অভিযোগ আনা শাহরীন রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ।
আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ইসাদ হোসেন, একই বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শাহীনুর ইসলাম, স্নাতক ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আমিনুল ইসলাম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বেলাল হোসেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রায়হান রহমান রাব্বি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বিভাগের বিপুল হাসান ও একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আশিকুজ্জামান লিমন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে জানা যায়, আসামিদের মধ্যে শাহীনুর ইসলাম, বেলাল হোসেন ও রায়হান রহমান রাব্বির নামে চাকরিপ্রার্থী অপহরণের ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর একটি মামলা হয়।
এছাড়া ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক হওয়ায় ইসাদ হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
এ ঘটনায় ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটি ইসাদ হোসেনকে স্থায়ী বহিষ্কারও করে।
এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, “শিক্ষার্থী শাহরীন যশোর কোতোয়ালি থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি নিয়মিত মামলা রজু করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।”
শাহরীন রহমান মামলার অভিযোগে বলেন, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলার সময় কথা কাটাকাটির জেরে তার বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শাহীনুর ইসলাম তাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেন।
এ ঘটনায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
এ কারণে তাকে বুধবার শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার কক্ষে (৩০৬ নং) ডেকে নিয়ে রাতভর নির্যাতন করা হয়।
মামলায় শাহরীনের অভিযোগ, ওই রাতে তাকে বেধড়ক মারধর করে হল ছাড়তে বলা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে করা অভিযোগ না তুলে নিলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারালে তাকে কক্ষের বাইরে রেখে দেওয়া হয়। জ্ঞান ফিরলে তিনি হলে তার কক্ষে ফিরে যান। তখন ওই কক্ষের অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
থানায় মামলা ছাড়াও শাহরীন রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মো. আনোয়ার হোসেন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে জানান উপাচার্য।