Published : 18 Mar 2025, 06:30 PM
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ-এলজিইডির গাইবান্ধা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলামকে এলজিইডির প্রধান কার্যালয় থেকে কারণ দর্শার নোটিস পাঠানো হয়েছে।
রোববার এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) আবদুর রশীদ মিয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার গাইবান্ধা এলজিইডি কার্যালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি সংবাদমাধ্যমের কাছে আসে।
সিংড়া থানার ওসি আসমাউল হক বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম একটি প্রাইভেটকারে করে গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলেন। পথে নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল গেইট এলাকায় পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশির সময় গাড়ির পেছনের ডালা থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার হয়। পরে তাকে ও গাড়ির চালককে সিংড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
“তদন্তকারী কর্মকর্তা তলব করামাত্র হাজির হবেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় এমন শর্তে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ছাবিউল ইসলাম। এ সময় তিনি ওই টাকা তার জমি বিক্রির টাকা বলে দাবি করেন। তবে এর সমর্থনে ছাবিউল কোনো প্রমাণ দিতে না পারায় পুলিশ ওই টাকা ও টাকা বহনকারী গাড়িটি জব্দ করে। পরে আদালতের নির্দেশে ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়।”
গাইবান্ধার এলজিইডির অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ঘটনার পর থেকে প্রকৌশলী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলাম কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবারও অফিসে যান নাই তিনি।
এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম গত ১৩ মার্চ কর্মস্থল ত্যাগ করেন। ফলে জরুরি প্রয়োজনে কর্মস্থলে তাকে না পাওয়ায় সরকারি কাজে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ওই প্রকৌশলীর কার্যকলাপ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণের সামিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
নোটিসে নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কেনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা চিঠি পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে।
তবে কারণ দর্শানোর চিঠির বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার ছাবিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।
গাইবান্ধা এলজিইডি ও সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ছাবিউল ইসলাম ২০০৫ সালের ২১ ডিসেম্বর গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী।
দীর্ঘ ২১ বছর তিনি গাইবান্ধা জেলায় কর্মরত আছেন। মাঝে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাকে বরিশালে বদলি করা হলেও মাত্র ২৩ দিনের মাথায় আবার গাইবান্ধায় যান।
গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, “সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে টানা তিন বছরের বেশি থাকার কথা না। যে কর্মকর্তা দীর্ঘ সময় ঘুরেফিরে একই জায়গায় থাকেন, তার মধ্যে অসৎ উদ্দেশ্য থাকে।”