Published : 20 Feb 2025, 09:40 PM
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
এ ছাড়াও প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে, হামলায় আহত হয়েছে গবাদি পশুও।
বুধবার রাত ১০টা ও বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের কামাল দিঘী পাড়ে দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানান নাসিরনগর থানার ওসি মো. খায়রুল আলম।
স্থানীয়রা জানান, ফান্দাউক গ্রামের শাহজাহানের ছেলে রুবেল শাহের সঙ্গে একই গ্রামের আজদিন মিয়ার ছেলে শাফায়েত মিয়ার পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। এ নিয়ে কিছুদিন পর পর তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
এর জেরে বুধবার রাত ১০টার দিকে রুবেল শাহ ও শাফায়েতের আত্মীয় পারভেজ মিয়ার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়।
এই সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে পশুর হাটে যাওয়ার সময় শাফায়েতের পক্ষের মারুফ মিয়ার ওপর হামলা চালায় রুবেল শাহর লোকজন। তাতে ফের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
স্থানীয়দের দাবি- দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়।
সংঘর্ষের সময় শাফায়েতের পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর হামলা ও লুটপাটের অভিযোগও উঠেছে।
্নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক গ্রামবাসী অভিযোগ করেন, মূলত ইয়াবা কেনাবেচার পাওনা টাকা নিয়েই দুপক্ষের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব চলছে।
তবে এ বিষয়ে রুবেল শাহর সঙ্গে কথা হলে তিনি ‘মাদকের টাকা নিয়ে’ দ্বন্দ্বের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমার বড় ভাই নাইম শাহ পাশের বাড়ির শাফায়েত ও পারভেজের কাছ ৭০ হাজার টাকা পায়। সে টাকা ফেরত চাওয়ায় আমাদের উপর হামলা করে শাফায়েতের লোকজন।”
তিনি দাবি করেন- দুই দফা হামলায় প্রায় ৭০ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- বাক্কের শাহ, ফকরুল শাহ, সাফিউল শাহ, সালাউদ্দিন শাহ, আলামিন শাহ, সালমান শাহ, ইয়ামিন শাহ, ইমন শাহ, জাকির শাহ, মেরাজ শাহ, মবিন শাহ, হৃদয় শাহ, লালন শাহ, মহিন শাহ, রায়হান শাহ, নিজাম শাহ, মুনা শাহ, মুক্তাদির শাহ, মুনী শাহ, সজল শাহ, ফয়সাল শাহ, শিফন শাহ, শামীম শাহ, বাদল শাহ, ইধন শাহ, নাজুল শাহ, আলম শাহ, শাকিল শাহ, ইমন শাহ, মাসুক মিয়া, কামরুল মিয়া, নিজাম মিয়া, জুবায়র মিয়া, শাহনাজ মিয়া, আবদুল্লাহ মিয়া, বক্কর মিয়া, হুমায়ুন মিয়া, তানভির ফয়সল মিয়া, লীমা বেগম, রাকিবা বেগম, নাসুমা, নাছিমা বেগম, ফারহানা বেগম, লীজা বেগম, কল্পনা বেগম, আকলিমা বেগম, তানজু বেগম, শলিনা বেগম, খুদেজা বেগম, রাকিবা, সিমু বেগম, সুমাইয়া বেগম, জানাত বেগম, ইভা বেগম ও নুসরাত বেগম।
এ বিষয়ে জানতে শাফায়েতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম বলন, “সংঘর্ষের পর দুই পক্ষের লোকজনই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বুধবার রাত ১০টার পর থেকে প্রায় ১২টা পর্যন্ত তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ফের বৃহস্পতিবার মারামারির পর দুই পক্ষের লোকজন চিকিৎসা নিতে এসেছে হাসপাতালে।”
তবে কতজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তার সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি এই চিকিৎসক।
নাসিরনগর থানার ওসি মো. খায়রুল আলম বলেন, “পাওনা টাকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। ”
এছাড়া মাদকের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের অভিযোগের কথা জানিয়ে প্রশ্ন করলে- এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান ওসি।