Published : 14 Jun 2025, 03:55 PM
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইলে অরোরা স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান ভেদরগঞ্জ থানার ওসি মো. পারভেজ আহম্মেদ সেলিম।
নিহত ফারদিন আহমেদ ইয়াসিন মৃধা (১৫) ভেদরগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হানিফ মৃধার ছেলে। সে স্থানীয় গৈড্যা এম এস ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় ইয়াসিনের মা ফরিদা ইয়াসমিন অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন। ছেলেন মৃত্যুতে ইয়াসিনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৫ জুন সন্ধ্যা ৭টায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রদল নেতা পন্নী কাজি, এনাম, সোহান, লিখন বেপারী, মবিন ও ইয়াসিনসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ভেদরগঞ্জ থানার এসআই হাকিম ও পুলিশ কনস্টেবল জাহিদ আহত হন।
আহতদের মধ্যে গুরুতর ইয়াসিনকে প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানের তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় পাঠানো হয়। ইয়াসিনের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে আবার উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ ঘটনায় ছাত্রদলের একটি পক্ষ বিচারের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
ইয়াসিনের মা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, “পৌর যুবদলের এক নেতার নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন মিলে আমার ছেলেকে পিটিয়ে আহত করেছে। তাকে প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়।
“আট দিন চিকিৎসার পর আমার ছেলে মারা যায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আর যেন কোনও মায়ের বুক খালি না হয়।”
ইয়াসিনের ফুফু জোস্না বেগম বলেন, “আমার ভাতিজা কোনও রাজনীতি করত না। ওরে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।”
পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য একলাছ উদ্দিন বেপারী বলেন, “নিরপরাধ ছেলেটিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার হোক।”
ওসি পারভেজ আহম্মেদ সেলিম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আমাদের কাছে কোনো প্রমাণ না থাকায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি; তবে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
শরীয়তপুর পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আসামিরা এলাকায় না থাকায় তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।