Published : 28 May 2024, 05:06 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে অন্তত ১৬৫ মিটার সিসি ব্লক ধসে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো জানায়, শহরের পুরান বাজার হরিসভা মন্দির ও বাকালি পট্টি এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে শহর রক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মেঘনা নদীতে ধসে গেছে।
সোমবার দিনভর টানা বৃষ্টিপাত ও মেঘনার উত্তাল ঢেউ বিকালে বাঁধে ভাঙন ধরে। তাৎক্ষণিকভাবে পাউবোর লোকজনকে বালি ভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করে।
দুপুরের পর থেকে ঢেউয়ের তীব্রতা বাড়তে থাকে। পাশাপাশি টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় কয়েক ফুট উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে তীরে।
পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে ভাঙন আতঙ্কে নদী তীরের অনেক লোকজন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এখনও স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হরিসভা মন্দির এলাকার কার্তিক সাহা বলেন, “বর্ষা আসলে প্রতি বছর নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। এর মধ্যে অনেকেই বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। ভাঙন দেখা দিলে কর্মকর্তারা আসেন নদীতে বালির বস্তা ফেলতে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। যে পরিস্থিতি রাতে আমাদের বাড়িঘর টিকে কিনা আমরা খুব শঙ্কিত।”
একই এলাকার সাবিত্রী সাহা বলেন, “আমাদের ঘর ভাঙতে ভাঙতে আর কিছু নেই। আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। বাঁধ ভাঙার কারণে এবারও ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সরকারের দাবি করছি, এখানে যাতে দ্রুত স্থায়ী বাঁধ করা হয়।”
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হরিসভা মন্দির এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙন স্থানে শ্রমিকরা জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলা অব্যাহত রেখেছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা কাজের তদারকি করছেন।
ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শনে আসা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, “শহর রক্ষা বাঁধের পুরান বাজার এলাকায় আটটি স্থানে প্রায় ১৬৫ মিটার সিসি ব্লক ধসে নদীতে তলিয়ে গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে আমাদের কাজ চলছে। এই কাজ অব্যাহত থাকবে।”
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, “পুরানবাজার এলাকায় ১০-১২ জন ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। এখানে স্থায়ী বাঁধ হবে, সেটির টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। ৮২৭ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি হয়ে গেলে আর আমাদের মধ্যে আতঙ্ক থাকবে না।”
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, পুরান বাজার শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙনের খবর পেয়েছি। এর মধ্যে পাউবোর লোকজন ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা এই জেলা প্রশাসকের।