Published : 01 Jun 2025, 06:35 PM
টানা ভারী বর্ষণে মাইনি নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে উঠার পর রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ছাড়া খাগড়াছড়ির বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। যদিও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি; তবে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
এ ছাড়া পাহাড় ধসের মধ্যে অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষকে জেলা সদরের শালবন এলাকার শিশু কল্যাণ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়ে আসা হয়েছে।
রোববার দুপুরে প্রশাসন জানিয়েছে, দীঘিনালার মাইনী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরই মধ্যে দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের হেডকোয়ার্টার এলাকা সড়ক ডুবে গেছে।
এর ফলে রাঙামাটি লংগদুর সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ছাড়া মেরুং ইউনিয়নের সোবাহানপুর, চিটাগাংইয়্যা পাড়া ও মেরুং বাজারের একাংশ ডুবে গেছে।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত কুমার সাহা বলেন, “ছোট মেরুং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭টা পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাবার ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ডুবে যানবাহন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে।”
এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, রোববার ভোর রাতে ধুমনীঘাট এলাকায় পাহাড় ধসে মহালছড়ির সঙ্গে জালিয়াপাড়া সড়কে যান চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়।
এ ছাড়া খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভূয়াছড়ি, গুগড়াছড়ি ও ন্যান্সি বাজার এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণহানি না হলেও যানবাহন চলাচল বিঘ্ন ঘটে।
এদিকে টানা ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শালবন, কুমিল্লা টিলা, ১৮ পরিবার, হরিনাথপাড়া গ্যাপ, নেন্সিবাজার, কলাবাগানসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে চেষ্টা করছে জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় বলেন, “সকাল থেকে বেশকিছু সড়কের উপর পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। পাহাড় ধসের ঝু্ঁকিতে থাকা অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষকে জেলা সদরের শালবন এলাকার শিশু কল্যাণ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে জেলা প্রশাসনের খিচুড়ি এবং ডিম রান্না করে খাওয়ানো হচ্ছে। সদর উপজেলায় চারটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।”
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে পাহাড় ধসে পড়ে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের আলুটিলায় এক অংশে পাহাড় ধসে পড়েছে।
“সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সড়ক সচল করতে কাজ করছে। এ ছাড়া দীঘিনালা-লংগদু সড়কে করইল্যাছড়ি এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধসে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়। পরে সড়ক বিভাগ মাটি সরানোর কাজ করে।”
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, জেলায় ১২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণস্থান ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত মাইকিং করা হচ্ছে।
“এ ছাড়া এলাকায় এলাকায় আমি নিজে গিয়ে অনুরোধ করছি। তারপরও অনেকে স্থান ছেড়ে যাচ্ছে না। আর যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তাদের জন্য পর্যাপ্ত পানি ও খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
দীঘিনালা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সুভূতি চাকমা বলেন, খাগড়াছড়িতে ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড হয়েছে।