Published : 24 May 2025, 07:04 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে একটি বহুতল ভবনে আগুনে নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল হামিদ চৌধুরী ওরফে ফাহাদ মামলাটি করেন বলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও দলটির সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
গত বছরের ২০ জুলাই বিকালে আন্দোলন চলাকালীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ইব্রাহিম খলিল শপিং কমপ্লেক্স নামে নয় তলাবিশিষ্ট একটি বহুতল ভবনে আগুন দেয় লোকজন।
দুইদিন পর ২২ জুলাই সকালে ভবনটির দ্বিতীয় তলা থেকে তিনজনের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তিনজন সেখানে ডাচ বাংলা ব্যাংকের শিমরাইল শাখার অভ্যন্তরীণ সজ্জার (ইন্টেরিয়র ডিজাইন) কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
নিহতদের একজন সুহেল আহমদ। ২১ বছর বয়সী সুহেল সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কাকুড়া গ্রামের তখলিছুর রহমানের ছেলে।
সুহেলের মৃত্যুর ১০ মাস পর তার বন্ধু আব্দুল হামিদ চৌধুরী ওরফে ফাহাদ হত্যা মামলাটি করেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ ফাহাদ সেদিন বেঁচে ফিরতে পেরেছিলেন বলেও মামলায় বলা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৩ জুলাই ফাহাদ ও তার বন্ধু সুহেল গ্রামের বাড়ি থেকে নারায়ণগঞ্জ আসেন। তারা ‘সুপিরিয়র ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে ইব্রাহিম খলিল শপিং কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় বেসরকারি ব্যাংকটির শাখায় টাইলস লাগানোর কাজ শুরু করেন। আন্দোলনের তীব্রতার কারণে ১৮ জুলাই থেকে কাজ বন্ধ রেখে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে ব্যাংকটির ভেতরেই থাকতে শুরু করেন।
২০ জুলাই বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে শামীম ওসমানের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের অজ্ঞাত ১৫০-২০০ জন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভবনের ভেতরে থাকা ব্যক্তিদেও হত্যার উদ্দেশ্যে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আগুন থেকে বাঁচতে দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন ফাহাদ। উপর থেকে লাফ দেওয়ায় তার বা পায়ের গোড়ালি ভেঙে যায় এবং বা হাত ও দুই কান পুড়ে যায় বলেও মামলায় বলা হয়েছে।
ঘটনার ১০ মাস পর নিহত সুহেল আহমদের পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে মামলাটি করেছেন বলেও জানান ২১ বছর বয়সী ফাহাদ।
এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে।
এ ভবনে একটি হাসপাতাল ও নবম তলায় কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের একটি ক্যাম্পও ছিল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা ওই ভবন ও আশপাশের এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চলে।
ভবনটিতে আটকে পড়া পুলিশ সদস্য ও হাসপাতালের রোগীদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ছাদ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই অভিযানে যৌথ বাহিনীর গুলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীসহ বেশ কয়েকজন প্রাণহানি ঘটে।