Published : 25 Feb 2023, 08:40 AM
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় মাছ চাষের জন্য সরকারি পুকুর ইজারা নিয়ে অংশবিশেষ ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
ওসিউজ্জামান নামের এক ব্যক্তি পুকুরটি ইজারা নেন মাছ চাষের জন্য। অভিযোগ রয়েছে ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে তিনি পুকুরের কিছু অংশ ভরাট করে দোকার নির্মাণ করেছেন।
পুকুর উদ্ধার ও রক্ষার দাবিতে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার জিহাদী।
ইজারা নেওয়া ওসিউজ্জামান উপজেলার সদর ইউনিয়নের আজগর দেওয়ানী পাড়া গ্রামের প্রয়াত কেরামত আলীর ছেলে। তিনি রাজিবপুর সদর ইউনিয়নর ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
ইজারার নথি থেকে জানা যায়, তিন বছরর জন্য বাংলা ১৪২৭ থেকে ১৪২৯ সনের ৩০শে [২০২৩ খ্রি.] চৈত্র পর্যন্ত পুকুরটি মাছ চাষের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে ইজারা নেন ওই বিএনপি নেতা। ইজারা মূল্য ধরা হয় ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
ইজারার শর্তে বলা হয়, ইজারা ভোগকালে পুকুরের চৌহদ্দি ও আকার-সীমানার কোনো পরিবর্তন করা যাবে না।
এই বিষয়ে অভিযোগকারী আব্দুস সাত্তার জিহাদী বলেন, কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে অবৈধভাবে এই পুকুরটি ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন ওসিউজ্জামান।
এর সমাধানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেও কাজ হয়নি বলে তার অভিযোগ।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা চত্বরের সঙ্গে লাগানো শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। এর সঙ্গে রয়েছে সরকারি এই পুকুর। স্টেডিয়ামের উত্তর পাশে রাস্তাসংলগ্ন পুকুরের অর্ধেক জায়গায় মাটি ফেলে ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে সারি সারি রঙ্গীন ঢেউ টিনের ঘর।
পুকুর ভরাটসহ স্থাপনা নির্মাণের কথা স্বীকার করন ওসিউজ্জামান বলেন, ইজারা নিলেও ওই পুকুরে তার নিজস্ব ১ একর ১৩ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্য ৮৩ শতক জমিতে মাটি ফেলে ভরাটসহ দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
“ভূমি অফিসের লোকজন এসে এই জমি মেপে দিয়েছেন। সে মোতাবেক দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।”
পুকুর ভরাটের কথা স্বীকার করে রাজিবপুর সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম মন্ডল বলেন, একই দাগে ওসিউজ্জামান ও উপজেলা পরিষদের জমি রয়েছে। ওসিউজ্জামান কোন পাশে মাটি ভরাট করেছেন তা তিনি বলতে পারেন না।
তবে কিছুদিন আগে ওই জায়গায় ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো বলেন, “উপজেলা পরিষদ থেকে ওই পুকুরটি ওসিউজ্জামানকে তিন বছরর জন্য লিজ [ইজারা] দেওয়া হয়েছে। লিজকৃত পুকুরটিতে ওসিউজ্জমানের অংশ রয়েছে।”
রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্ত্তী বলেন, সংশ্লিষ্ট তহসিলদারকে সীমানা নির্ধারণ করার জন্য বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত টিম এসে তদন্ত করে দেখবেন। এছাড়াও লিজ নেওয়া ব্যক্তিকে লিজ বাতিল কেন করা হবে না এই মর্মে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে।