Published : 30 Jul 2024, 11:17 PM
খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রী চলাচল আগামী ১৪ অগাস্ট থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুরে রামগড় ইমিগ্রেশন ভবনে ভার্চুয়ালি আয়োজিত এক সভায় ইমিগ্রেশন চালুর বিষয়টি জানিয়েছেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
ভিডিও বক্তব্যে তিনি বলেন, “ইমিগ্রেশন হয়ে যাত্রী পারাপারে ভারত থেকে পত্র পেয়েছি। আগামী ১৪ অগাস্ট উদ্বোধনের পর দুই দেশের নাগরিকরা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাপেক্ষে মৈত্রী সেতু-১ হয়ে পারাপারের সুযোগ পাবেন।
“প্রথমে যাত্রী চলাচল শুরু হচ্ছে, পরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি হলে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাও শুরু হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ চলছে।”
এসময় ভার্চুয়ালি সভায় ঢাকা থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও রামগড় স্থলবন্দর প্রকল্প পরিচালক মো. সরওয়ার আলম, রামগড় ইমিগ্রেশন থেকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমত জাহান তুহিন, ৪৩ বিজিবির সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ, রামগড় থানার ওসি দেবপ্রিয় দাস, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মনির হোসেন বক্তৃতা করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেভেন সিস্টার্স খ্যাত ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য ত্রিপুরা, মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচলের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রামগড় ও ত্রিপুরার সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর উদ্যোগ নেয় দুই দেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠকে রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের মধ্যে ট্রানজিট সুবিধা, যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর করা এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত হয়।
এই স্থলবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খাগড়াছড়ির রামগড়ের মহামুনি এলাকায় ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে একটি সেতুর ভিত্তি প্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন।
২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৪ দশমিক ৮০ মিটার প্রস্থের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে সেতুটির উদ্বোধন করেন।
পরবর্তীতে বাংলাদেশের পার্বত্যাঞ্চলের প্রথম স্থলবন্দর রামগড়ে নির্মিত আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালটি ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে মাত্র তিন ঘণ্টায় ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। ফলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ার সঙ্গে পাহাড়ের অর্থনীতি বিকশিত হবে আশা সংশ্লিষ্টদের।
আরও পড়ুন
রামগড় স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার মার্চেই: ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার
রামগড় স্থলবন্দর উদ্বোধন ১৪ নভেম্বর, চালু হতে আরও দুই মাস
খাগড়াছড়িতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় রামগড় স্থলবন্দর