Published : 08 Oct 2024, 02:07 PM
দেড় বছর আগে পঞ্চগড় সদরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
সোমবার দুপুরে শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে এই কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ।
সংগঠনটির পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সালমান জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী, মামলার আসামি ও বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
দেড় বছর আগে খতমে নবুওয়ত আন্দোলনের সমর্থকদের সঙ্গে আহমদিয়া সম্প্রদায় (কাদিয়ানী) ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলোকে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ মামলা আখ্যা দিয়ে প্রত্যাহারের দাবি জানান বক্তারা।
২০২৩ সালের মার্চে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসাকে কেন্দ্র করে তাদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই যুবক নিহত হন।
সেসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন বেশ কয়েকটি মামলা করে; যাতে কয়েক হাজার মানুষকে আসামি করা হয়।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ে এক সমাবেশ থেকে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি তোলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক।
তিনি সেদিন বলেন, “আমাদের অসংখ্য ভাইয়েরা কাদিয়ানীদের মিথ্যা মামলার শিকার। দয়া করে ফ্যাসিবাদের আমলে দায়ের করা অন্য সব মিথ্যা মামলার আগে পঞ্চগড়ে কাদিয়ানীদের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।”
এর প্রতিবাদ জানিয়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশের গণসংযোগ, প্রেস ও মিডিয়া সম্পাদক আহমদ তবশির চৌধুরী বলেন, “আহমদিয়া মুসলিম জামা'ত কোনো মিথ্যা মামলা করেনি।”
এ বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “আহমদিয়া মুসলিম জামা'তের বার্ষিক সন্মেলনে গত ২০২৩ সালের ৩ ও ৪ মার্চ একদল উগ্রবাদী আক্রমণ চালিয়ে আমাদের একজনকে হত্যা, দুই শতাধিক বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং আমাদের শতাধিক সদস্যকে আহত করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আহমদিয়া মুসলিম জামা'তের ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যগণ পঞ্চগড় সদর থানায় ১৩টি এবং বোদা থানায় ১০টি মামলা দায়ের করেন।
“এরমধ্যে বোদা থানার ১০টি মামলার চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। যথাসম্ভব স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ ও চাক্ষুষ সাক্ষীর ভিত্তিতে মামলাগুলো করা হয়েছে। মামলাগুলো বর্তমানে বিচারাধীন এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় রয়েছে।”
তবশির চৌধুরী বলেন, “গত ১৫ সেপ্টেম্বর হেফাজত ও খেলাফত মজলিস নেতা মামুনুল হক পঞ্চগড়ে জনসভা করে উল্লেখিত মামলাগুলোকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য একমাসের আল্টিমেটাম দেন। তারপর থেকেই কিছু কিছু মহল মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।
“মামলার বিবাদীদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আহমদিয়া মুসলিম জামা'তের বাদী সদস্য এবং বিবাদীদের মধ্যে বোদা থানায় দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহের বিষয়ে একটি শান্তিচুক্তির প্রক্রিয়া চলছিল, কিন্তু জনাব মামুনুল হকের উল্লেখিত ঘোষণার পর সেই শান্তিচুক্তির প্রক্রিয়াও ব্যহত হয়।”
আরও পড়ুন:
ছাত্র-জনতাকে টার্গেট করে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে: মামুনুল